দাম গল্পটি ছাত্র শিক্ষক পবিত্র সম্পর্কের উপর গভীর ছায়াপাত করেছে । মাস্টারমশায় শাসন করতেন , ভালবাসতেন না । এটা ঠিক নয় ' , আলোচনা করছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।
নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম নামক ছোটগল্পটির গল্প কথক সুকুমার । যিনি গল্পটির ধারকও বটে । সুকুমারের এবং তাঁর বন্ধুদের কাছে ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশায় ছিলেন বিভীষিকা স্বরুপ । যমের মত শিক্ষর্থীরা তাঁকে ভয় পেত , অঙ্কের ভয় পৃথিবীর বড় ভয়গুলোর একটা হলেও মাস্টার মশায়ের মারের কাছে তা ছিল নিতান্ত তুচ্ছ । পরবর্তীকালে সুকুমার যখন অল্পহলেও কিছুটা সমাজিক প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন , লেখালিখিও করেন । লেখালিখির সূত্রেই একটি অনামি পত্রিকার তরফ থেকে ছোটবেলার স্মৃতিচরণের উপর লেখা চাইলে , সুকুমার মাস্টার মশায়কে নিয়ে একটি লেখা পাঠিয়ে দেন । পত্রিকার তরফ থেকে পান দশটাকা সন্মানি । সেই লেখায় সুকুমার মাস্টার মশায়ের একটা বিভীষিকাময় রুপচিত্র অঙ্কন করেন । আধুনিক শিক্ষাপ্রাপ্ত সুকুমার মাস্টার মশায়ের অতিরিক্ত শাসন করার কঠোর সমালোচনাও করেন ।
এরপর বহুদিন পর বাংলাদেশের একটি কলেজে অতিথি ভাষণ দিতে গিয়ে সেই মাস্টার মশায়ের সক্ষাৎ পান সুকুমার । তিনি জানতে পারেন , তাঁর সেই পুরনো লেখাটি , যেটিতে মাস্টারমশায়ের কঠোর সমলোচনা করেছিলেন , সেটি এখন মাস্টার মশায়ের সর্বক্ষণের সঙ্গী । একদিনের সেই ছোট্র ছাত্র আজ সভ্য সমাজের একজন বিশিষ্ট জন এটা মাস্টার মশায়ের কাছে অত্যন্ত গর্বের । ছাত্রের সমলোচনাকে তিনি সন্তানের অধিকার বলে সাদরে গ্রহন করেছিলেন । সুকুমার এবার উপলব্ধি করেন , ছোট বেলায় তিনি মাস্টার মশায়ের কঠোর অনুশীলনটাই দেখেছেন , শাসন দেখেছেন কিন্তু তা ব্যতিরেখে ছাত্রের প্রতি মাস্টার মশায়ের ভালবাসার ফল্গুধারাকে দেখেনি , দেখেননি স্নেহ আর ভালোবাসার স্রোত । কেননা যিনি ভালবাসেন তিনিই শাসন করতে পারেন । সেই শাসনের মধ্যেই লুকিয়ে থাকা সাফল্যের চাবি ।
ছেলেবেলার মাস্টার মশায়ের ভালোবাসা , হাঁক ডাক , শাসন পীড়ন মাত্র দশ টাকার বিনিময়ে বিকিয়ে দিয়েছেন সুকুমার । এক পৃথিবী অস্বস্তি আঁকড়ে ধরে সুকুমারকে, মনে হলো পায়ের তলার মাটি আলগা হয়ে যাচ্ছে ক্রমশঃ । মাস্টার মশায়ের ভালোবাসা , স্নেহ , শাসন অমূল্য , কোন অর্থেই তা বিক্রয় যোগ্য নয় । ।
দাম গল্প সুকুমার কোন উপলব্ধিতে পৌছেছে
উত্তরমুছুনদাম গল্প সুকুমাৰ কোন উপলব্ধিতে পৌছেছে।
উত্তরমুছুনগ্জ্দ্ভ
উত্তরমুছুন