পোস্টগুলি

রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর ছোটগল্প - সম্পাদক

সম্পাদক আমার স্ত্রী-বর্তমানে প্রভা সম্বন্ধে আমার কোনো চিন্তা ছিল না। তখন প্রভা অপেক্ষা প্রভার মাতাকে লইয়া কিছু অধিক ব্যস্ত ছিলাম। তখন কেবল প্রভার খেলাটুকু হাসিটুকু দেখিয়া, তাহার আধো আধো কথা শুনিয়া, এবং আদরটুকু লইয়াই তৃপ্ত থাকিতাম; যতণ ভালো লাগিত নাড়াচাড়া করিতাম, কান্না আরম্ভ করিলেই তাহার মার কোলে সমর্পণ করিয়া সত্বর অব্যাহতি লইতাম। তাহাকে যে বহু চিন্তা ও চেষ্টায় মানুষ করিয়া তুলিতে হইবে এ কথা আমার মনে আসে নাই। অবশেষে অকালে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হইলে একদিন মায়ের কোল হইতে খসিয়া মেয়েটি আমার কোলের কাছে আসিয়া পড়িল, তাহাকে বুকে টানিয়া লইলাম। কিন্তু মাতৃহীনা দুহিতাকে দ্বিগুণ স্নেহে পালন করা আমার কর্তব্য এটা আমি বেশি চিন্তা করিয়াছিলাম, না পত্নীহীন পিতাকে পরম যত্নে রক্ষা করা তাহার কর্তব্য এইটে সে বেশি অনুভব করিয়াছিল, আমি ঠিক বুঝিতে পারি না। কিন্তু ছয় বৎসর বয়স হইতেই সে গিন্নিপনা আরম্ভ করিয়াছিল। বেশ দেখা গেল, ঐটুকু মেয়ে তাহার বাবার একমাত্র অভিভাবক হইবার চেষ্টা করিতেছে। আমি মনে মনে হাসিয়া তাহার হস্তে আত্মসমর্পণ করিলাম। খিলাম, যতই আমি অকর্মণ্য অসহায় হই ততই তাহার লাগে ভালো; দেখিলাম, আমি ...

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি অমর ছোট গল্প - ডিটেক্টিভ

ছবি
ডিটেকটিভ আমি পুলিসের ডিটেকটিভ কর্মচারী । আমার জীবনের দুটিমাত্র লক্ষ্য ছিল — আমার স্ত্রী এবং আমার ব্যবসায় । পূর্বে একান্নবর্তী পরিবারের মধ্যে ছিলাম , সেখানে আমার স্ত্রীর প্রতি সমাদরের অভাব হওয়াতেই আমি দাদার সঙ্গে ঝগড়া করিয়া বাহির হইয়া আসি । দাদাই উপার্জন করিয়া আমাকে পালন করিতেছিলেন , অতএব সহসা সস্ত্রীক তাঁহার আশ্রয় ত্যাগ করিয়া আসা আমার পক্ষে দুঃসাহসের কাজ হইয়াছিল । কিন্তু কখনো নিজের উপরে আমার বিশ্বাসের ত্রুটি ছিল না । আমি নিশ্চয় জানিতাম , সুন্দরী স্ত্রীকে যেমন বশ করিয়াছি বিমুখ অদৃষ্টলক্ষ্মীকেও তেমনি বশ করিতে পারিব । মহিমচন্দ্র এ সংসারে পশ্চাতে পড়িয়া থাকিবে না । পুলিসবিভাগে সামান্যভাবে প্রবেশ করিলাম , অবশেষে ডিটেক্‌‌টিভ-পদে উত্তীর্ণ হইতে অধিক বিলম্ব হইল না । উজ্জ্বল শিখা হইতেও যেমন কজ্জলপাত হয় তেমনি আমার স্ত্রীর প্রেম হইতেও ঈর্ষা এবং সন্দেহের কালিমা বাহির হইত । সেটাতে আমার কিছু কাজের ব্যাঘাত করিত; কারণ পুলিসের কর্মে স্থানাস্থান কালাকাল বিচার করিলে চলে না , বরঞ্চ স্থানের অপেক্ষা অস্থান এবং কালের অপেক্ষা অকালটারই চর্চা অধিক করিয়া করিতে হয় — তাহাতে করিয়া আমার স্ত্রীর স্...