লিখছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি । সংস্কৃত সাহিত্যের সর্বাধিক প্রজ্বলিত নক্ষত্র মহাকবি কালিদাস । তাঁর অসংখ্য সৃস্টি সম্ভারের মধ্যে ' অভিজ্ঞানম শকুন্তলম ' একটি উজ্জ্বল উদ্ধার । এই নাটকের ষষ্ট অঙ্ক থেকে নেওয়া ধীবর বৃত্তান্ত নামক অংশটি । আমাদের আলোচনার প্রেক্ষিত ধীবরের চারিত্রিক ঘূর্ণনের বর্ণনা । নাটকের অংশটি গভীর অভিনিবেশে পাঠ করলে ধীবর চরিত্রের বিশেষ কয়েকটি দিক আমাদের চাক্ষুস হয় । তাঁর চরিত্রের একটি প্রধান দিক হল সততা । গরীব হলেও আংটি পাওয়ার পরও সে ছলনার আশ্রয় নেয়নি । রাজার শ্যালক এবং রক্ষীদের মিথ্যা বলে সে বিপথে চলাতে পারতো । তা না করে সে সত্যবাক্য বলে গেছে প্রথম থেকে শেষপর্যন্ত । একই সঙ্গে সে স্পষ্টভাষীও বটে । রাজকর্মচারীরা তাকে রাজদরবারে ধরে নিয়ে যাবার পর নানান জিজ্ঞাসাবাদেও সে বিচলিত হয়নি । রুইমাছের পেট থেকে আংটি পাওয়ার কথা সে অত্যন্ত বলিষ্ঠতার সাথে উচ্চারণ করেছে - ''এখন মারতে হয় মারুন , ছেড়ে দিতে হয় দিন ' ' শুধু তাই নয় , চুরির অপবাদ থেকে মুক্তির পর বিনা দোষে তার উপর অত্যাচার হয়েছে এ কথা বলতেও সে বিন্দুমাত্র ভয় পায়নি , বরং ক্ষ...
আলোচনা করছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি । । Bhogot Singh শরৎচন্দ্র চট্রপাধ্যায় বিরচিত পথের দাবি উপন্যসের অংশ বিশেষ আমাদের পাঠ্য । পাঠ্যংশটির একটি আলোচিত চরিত্র হলো ছদ্মবেশী বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক , যিনি গল্পে দেখা দিয়েছেন তেলখনির শ্রমিক গিরিশ মহাপাত্ররুপে । গিরিশ মহাপাত্রের চেহারা , পোশাকের মধ্যে লেখক অপূর্ব কৌতুকময় অবস্থার সংস্থাপন করেছেন । বয়স ত্রিশ বত্রিশের অধিক নয় । রঙ অত্যন্ত ফর্সা , তবে রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে গেছে । শরীর হালকা পাতলা , একটু কাশি হলেই কম্পিত হয় পুরো শরীর । দেখে মনে হয় পৃথিবীর মায়া কেটে যাবে তাড়াতাড়ি । ভিতরে বাসা বেঁধেছে দুরারোগ্য কোন ব্যধি । দেহ ক্ষয় হচ্ছে নদী ভাঙ্গনের মত । তবে আশ্চর্য বিষয় দুটি চোখের দৃষ্টি , ' ' সে চোখ চোট কী বড় , টানা কী গোল , দীপ্ত কী প্রভাহীন এ সকল বিবরণ , দিতে যাওয়ায় বৃথা । অত্যন্ত গভীর জলাশয়ের কী যে তাহাতে আছে ভয় হয় , এখানে খেলা...
নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম নামক ছোটগল্পটির গল্প কথক সুকুমার । যিনি গল্পটির ধারকও বটে । সুকুমারের এবং তাঁর বন্ধুদের কাছে ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশায় ছিলেন বিভীষিকা স্বরুপ । যমের মত শিক্ষর্থীরা তাঁকে ভয় পেত , অঙ্কের ভয় পৃথিবীর বড় ভয়গুলোর একটা হলেও মাস্টার মশায়ের মারের কাছে তা ছিল নিতান্ত তুচ্ছ । পরবর্তীকালে সুকুমার যখন অল্পহলেও কিছুটা সমাজিক প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন , লেখালিখিও করেন । লেখালিখির সূত্রেই একটি অনামি পত্রিকার তরফ থেকে ছোটবেলার স্মৃতিচরণের উপর লেখা চাইলে , সুকুমার মাস্টার মশায়কে নিয়ে একটি লেখা পাঠিয়ে দেন । পত্রিকার তরফ থেকে পান দশটাকা সন্মানি । সেই লেখায় সুকুমার মাস্টার মশায়ের একটা বিভীষিকাময় রুপচিত্র অঙ্কন করেন । আধুনিক শিক্ষাপ্রাপ্ত সুকুমার মাস্টার মশায়ের অতিরিক্ত শাসন করার কঠোর সমালোচনাও করেন । এরপর বহুদিন পর বাংলাদেশের একটি কলেজে অতিথি ভাষণ দিতে গিয়ে সেই মাস্টার মশায়ের সক্ষাৎ পান সুকুমার । তিনি জানতে পারেন , তাঁর সেই পুরনো লেখাটি , যেটিতে মাস্টারমশায়ের কঠোর সমলোচনা করেছিলেন , সেটি এখন মাস্টার মশায়ের সর্বক্ষণের সঙ্গী । একদিনের সেই ছোট্র ছাত্র আজ সভ্য সমাজের একজন বিশিষ্ট জন...
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন