রবীন্দ্র সাহিত্যে বাস্তবতা ,অনুশ্রুত জনমানবের নগন্য উপস্তিতি এবং সমাজ সচেতনতা বিষয়ক আলোচনা - আলোচক আরিফুল ইসলাম সাহাজি
প্রথমেই বলি এই অনুদীর্ঘ পরিসরে সমগ্র রবীন্দ্র সাহিত্যকে ধরা শুধু কঠিন নয় ,অসম্ভব ।তবু ,স্বল্প সময়ের পরিসরে নিজ অধ্যয়নের সীমাবদ্ধতা সামনে রেখে সাহিত্য বিষয়ক এই আলোচনায় রবী ঠাকুরের
অবদান সম্পর্কে দুই এক কথা বলবার প্রয়োজন অনুভব করছি ।
আমরা সকলে জানি বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে বড় তারকা হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।আলোচনায় অগ্রসর হওয়ার পূর্বে বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে কিছু ধারণা থাকা দরকার ।আমরা জানি 1907 সালে নেপালের রাজদরবার থেকে উদ্ধার হওয়া জীর্ণ পাণ্ডুলিপি "চর্যাপদ "বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন ।পরে চণ্ডীমঙ্গল ,মনসামঙ্গল ,ধর্মমঙ্গল ,প্রভৃতি অতিরঞ্জিত বইয়ে অহেতুক দেব মহত্ব ,এবং তারপরে রামপ্রসাদ ,কমলাকান্ত এর হাতে সৃষ্ট ভক্তি গীতি পেরিয়ে আরাকান রাজসভার দুই মুসলিম কবি দৌলত কাজী ও আলাওলের কাছে সর্বপ্রথম শোনা যায় মানুষের জয়গান ।এরপর আবির্ভূত হন মধ্যযুগিয় শক্তিশালী কবি রায়গুনাকর ভারতচন্দ্র ,তাঁর অন্নপূর্ণা ঈশ্বরী পাঠনী ,বির্দসুন্দোর এর মধ্য দিয়ে সাংবাদিক কবি ঈশ্বর গুপ্তিক পর্বের সমাপনের মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যের জয়পতাকা এসে পৌঁছায় মহাকবি মাইকেল মধুসূদন এর কাছে ।মাইকেলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলা সাহিত্য নবালকত্ব কাটিয়ে যৌবন এর দ্বার প্রান্তে এসে উপনীত হয় ।কিন্তু বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যে পেশ করবার মত উপযুক্ত স্বরস্বতীর বরপুত্রের আগমন তখন হয়নি :1861,7ই মে জন্ম নেন বাংলা মায়ের গর্বের সন্তান রবীন্দ্রনাথ ।
সমগ্র পৃথিবী আজও ভারতবর্ষকে চেনে 3cপ্লাস এ :একটু খোলাসা করা যাক 3সী হল ক্রিকেট ,কারাপসন ,সিনেমা সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ।এই ঋষিপ্রতীম মানুষটিও তাঁর সময়ে প্রবল বিরুদ্ধ সমালোচনা বিদ্ধ হয়েছিলেন ,এঁদের প্রতিনিধি স্থানীয় ছিলেন মোহিতলাল মজুমদার ,D.L Roy প্রমুখ ।এদের অভিযোগ ছিল মূলত তিনটি
1: রবীন্দ্র সাহিত্য ভাবের সাহিত্য ,তাতে বাস্তবতার কোন ভূমিকা নেই !
2: রবীন্দ্র সাহিত্যে অতি সাধারন জনমানব এর জীবনক্ষেত্র প্রবল ভাবে অনুপস্থিত ।
3: রবীন্দ্র সাহিত্য সমাজ সচেতনতাহীন ,সমকালীন যুগকে তিনি চক্ষুগোচর করেননি ।
সমালোচকদের বক্তব্য রবীন্দ্র সাহিত্য বড় বেশি ভাসা ভাসা ,বাস্তব পৃথিবীর অনেক উদ্ধে ! তাঁর অমিত ,কেটি ,দামিনী ,শ্রীবিলাস ,নিখিলেশরা যেন এ পৃথিবীর মানুষ নই ;একি সঙ্গে সকলেই উচ্চবিত্ত ।শরতচন্দ্রের গফুর ,আমিনা ,কাঙালী ,অভাগী মত মানুষদের কোন স্থান নেই রবীন্দ্র সাহিত্যে ;শুধু তাই নয় সমালোচকদের মারাত্বক অভিযোগ ছিল তিনি সমাজ সচেতন নন ,বিশেষ করে ইংরেজদের প্রসঙ্গে তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তার অভাব রয়েছে ।
রবীন্দ্র সমসাময়িক সাহিত্যেবোদ্ধারা যদিও আহেন অভিযোগকে ফুত্কারে উড়িয়ে দিয়েছেন ;তবু আজ রবীন্দ্র বিরোধী এই সমালোচনার জবাব দেয়ার ক্ষীণ চেষ্টা করছি মাত্র -
1;2:সমালোচকদের প্রথম অভিযোগ ছিল রবীন্দ্র সাহিত্যে ভাবের সাহিত্যে ,সেখানে বাস্তবতা নেই বললেই চলে ;এর উত্তরে আমরা কাবুলিওয়ালার রহমতের কথা বলতে পারি ,রহমতের পিতৃ হৃদয় ,সন্তান বাত্সল্য ,রিমির প্রতি ভালবাসার মত অকৃত্তিম প্রেম বাংলা সাহিত্যে নয় ,বিশ্ব সাহিত্যে দুর্লভ ।একি সঙ্গে পোস্টমাস্টার এর রতন ,কিম্বা ফটিক ,বিনোদনীরা বাস্তবের প্রতিমূর্তি ।একিসঙ্গে তারা অতিসাধারন ।
3: তিন নম্বর অভিযোগ ছিল রবীন্দ্রনাথ সমাজ সচেতন ছিলেন না ,এর উত্তরে বলব রবীন্দ্রনাথ শুধুমাত্র একজন সাহিত্যসাধক নন ,তিনি ভারতীয় সংস্কৃতির ধারক ও বাহক - ভারতবর্ষের মূর্তবিগ্রহ ।আমরা জানি
বঙ্গভঙ্গের সময় তিনি নিজেকে যুক্ত করে রাখিবন্ধনের সূত্রপাত করেছিলেন ,লিখেছিলেন "বাংলার মাটি ,বাংলার গান "অমর গানখানি ।তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি নোবেল পেয়েছিলেন ।এবং বিশ্বের একমাত্র মানুষ যাঁর রচিত তিনটি সংগীত তিনটি দেশের জাতীয় সংগীত (ভারত ,বাংলাদেশ ,শ্রীলঙ্কা জাতীয় সংগীত কবি গুরুর লেখা তবে সেটা সিংহলি ভাষায় অনূদিত )।সুতারং বলা যায় এ সমস্ত বিরুদ্ধ সমালোচনা হাস্যকর ছাড়া আর কিছু না ।
অবদান সম্পর্কে দুই এক কথা বলবার প্রয়োজন অনুভব করছি ।
আমরা সকলে জানি বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে বড় তারকা হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।আলোচনায় অগ্রসর হওয়ার পূর্বে বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে কিছু ধারণা থাকা দরকার ।আমরা জানি 1907 সালে নেপালের রাজদরবার থেকে উদ্ধার হওয়া জীর্ণ পাণ্ডুলিপি "চর্যাপদ "বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন ।পরে চণ্ডীমঙ্গল ,মনসামঙ্গল ,ধর্মমঙ্গল ,প্রভৃতি অতিরঞ্জিত বইয়ে অহেতুক দেব মহত্ব ,এবং তারপরে রামপ্রসাদ ,কমলাকান্ত এর হাতে সৃষ্ট ভক্তি গীতি পেরিয়ে আরাকান রাজসভার দুই মুসলিম কবি দৌলত কাজী ও আলাওলের কাছে সর্বপ্রথম শোনা যায় মানুষের জয়গান ।এরপর আবির্ভূত হন মধ্যযুগিয় শক্তিশালী কবি রায়গুনাকর ভারতচন্দ্র ,তাঁর অন্নপূর্ণা ঈশ্বরী পাঠনী ,বির্দসুন্দোর এর মধ্য দিয়ে সাংবাদিক কবি ঈশ্বর গুপ্তিক পর্বের সমাপনের মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যের জয়পতাকা এসে পৌঁছায় মহাকবি মাইকেল মধুসূদন এর কাছে ।মাইকেলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলা সাহিত্য নবালকত্ব কাটিয়ে যৌবন এর দ্বার প্রান্তে এসে উপনীত হয় ।কিন্তু বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যে পেশ করবার মত উপযুক্ত স্বরস্বতীর বরপুত্রের আগমন তখন হয়নি :1861,7ই মে জন্ম নেন বাংলা মায়ের গর্বের সন্তান রবীন্দ্রনাথ ।
সমগ্র পৃথিবী আজও ভারতবর্ষকে চেনে 3cপ্লাস এ :একটু খোলাসা করা যাক 3সী হল ক্রিকেট ,কারাপসন ,সিনেমা সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ।এই ঋষিপ্রতীম মানুষটিও তাঁর সময়ে প্রবল বিরুদ্ধ সমালোচনা বিদ্ধ হয়েছিলেন ,এঁদের প্রতিনিধি স্থানীয় ছিলেন মোহিতলাল মজুমদার ,D.L Roy প্রমুখ ।এদের অভিযোগ ছিল মূলত তিনটি
1: রবীন্দ্র সাহিত্য ভাবের সাহিত্য ,তাতে বাস্তবতার কোন ভূমিকা নেই !
2: রবীন্দ্র সাহিত্যে অতি সাধারন জনমানব এর জীবনক্ষেত্র প্রবল ভাবে অনুপস্থিত ।
3: রবীন্দ্র সাহিত্য সমাজ সচেতনতাহীন ,সমকালীন যুগকে তিনি চক্ষুগোচর করেননি ।
সমালোচকদের বক্তব্য রবীন্দ্র সাহিত্য বড় বেশি ভাসা ভাসা ,বাস্তব পৃথিবীর অনেক উদ্ধে ! তাঁর অমিত ,কেটি ,দামিনী ,শ্রীবিলাস ,নিখিলেশরা যেন এ পৃথিবীর মানুষ নই ;একি সঙ্গে সকলেই উচ্চবিত্ত ।শরতচন্দ্রের গফুর ,আমিনা ,কাঙালী ,অভাগী মত মানুষদের কোন স্থান নেই রবীন্দ্র সাহিত্যে ;শুধু তাই নয় সমালোচকদের মারাত্বক অভিযোগ ছিল তিনি সমাজ সচেতন নন ,বিশেষ করে ইংরেজদের প্রসঙ্গে তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তার অভাব রয়েছে ।
রবীন্দ্র সমসাময়িক সাহিত্যেবোদ্ধারা যদিও আহেন অভিযোগকে ফুত্কারে উড়িয়ে দিয়েছেন ;তবু আজ রবীন্দ্র বিরোধী এই সমালোচনার জবাব দেয়ার ক্ষীণ চেষ্টা করছি মাত্র -
1;2:সমালোচকদের প্রথম অভিযোগ ছিল রবীন্দ্র সাহিত্যে ভাবের সাহিত্যে ,সেখানে বাস্তবতা নেই বললেই চলে ;এর উত্তরে আমরা কাবুলিওয়ালার রহমতের কথা বলতে পারি ,রহমতের পিতৃ হৃদয় ,সন্তান বাত্সল্য ,রিমির প্রতি ভালবাসার মত অকৃত্তিম প্রেম বাংলা সাহিত্যে নয় ,বিশ্ব সাহিত্যে দুর্লভ ।একি সঙ্গে পোস্টমাস্টার এর রতন ,কিম্বা ফটিক ,বিনোদনীরা বাস্তবের প্রতিমূর্তি ।একিসঙ্গে তারা অতিসাধারন ।
3: তিন নম্বর অভিযোগ ছিল রবীন্দ্রনাথ সমাজ সচেতন ছিলেন না ,এর উত্তরে বলব রবীন্দ্রনাথ শুধুমাত্র একজন সাহিত্যসাধক নন ,তিনি ভারতীয় সংস্কৃতির ধারক ও বাহক - ভারতবর্ষের মূর্তবিগ্রহ ।আমরা জানি
বঙ্গভঙ্গের সময় তিনি নিজেকে যুক্ত করে রাখিবন্ধনের সূত্রপাত করেছিলেন ,লিখেছিলেন "বাংলার মাটি ,বাংলার গান "অমর গানখানি ।তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি নোবেল পেয়েছিলেন ।এবং বিশ্বের একমাত্র মানুষ যাঁর রচিত তিনটি সংগীত তিনটি দেশের জাতীয় সংগীত (ভারত ,বাংলাদেশ ,শ্রীলঙ্কা জাতীয় সংগীত কবি গুরুর লেখা তবে সেটা সিংহলি ভাষায় অনূদিত )।সুতারং বলা যায় এ সমস্ত বিরুদ্ধ সমালোচনা হাস্যকর ছাড়া আর কিছু না ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন