রুদ্র বোসের তিনটি কবিতা
বাতিঘর / রুদ্র বোস
মনে করো
কোকিলডাকা ভোরে
কলিংবেলের আওয়াজে
বিরক্তমুখে দরজা খুলে দেখলে
আমি দাঁড়িয়ে আছি--
সেই একমাথা এলোমেলো চুল
আর চোখে ফিচলেমি হাসি নিয়ে
সটান তাকিয়ে আছি তোমার মুখের দিকে
কোকিলডাকা ভোরে
কলিংবেলের আওয়াজে
বিরক্তমুখে দরজা খুলে দেখলে
আমি দাঁড়িয়ে আছি--
সেই একমাথা এলোমেলো চুল
আর চোখে ফিচলেমি হাসি নিয়ে
সটান তাকিয়ে আছি তোমার মুখের দিকে
দেখছি অসন্তোষ আর বিস্ময়ের ঠাসবুনন
কথা টপকে আছে আধখোলা ঠোঁটের ফাঁকে
সারাশরীর জুড়ে ঘুম-আবেশ ক্যানভাসে আঁকা
রাগ দ্বিধা সন্দেহ বিতৃষ্ণা অভিমান রঙের এলোমেলো বিমূঢ় লুকোচুরি আর আর-
সেই ডুবেসুখ কাজলপরা থইথই দুটো চোখ
কথা টপকে আছে আধখোলা ঠোঁটের ফাঁকে
সারাশরীর জুড়ে ঘুম-আবেশ ক্যানভাসে আঁকা
রাগ দ্বিধা সন্দেহ বিতৃষ্ণা অভিমান রঙের এলোমেলো বিমূঢ় লুকোচুরি আর আর-
সেই ডুবেসুখ কাজলপরা থইথই দুটো চোখ
হঠাৎ হাত বাড়িয়ে যদি বলি-এখন সময় হয়েছে
চলো বয়ে যাই বাকী জীবন, যেমন কথা ছিলো
চলো বয়ে যাই বাকী জীবন, যেমন কথা ছিলো
নিশ্চিত বলতে পারি-কোনো কথা বলবে না তুমি, কেবল দাঁত দিয়ে ঠোঁটের কোণ কামড়ে পায়ের নখে টানবে হিজিবজি আঁচড়
টেবোটেবো গালদুটো লাল হয়ে উঠবে আরও
ঘন নি:শ্বাসে নাকের পাটা ফুলে ফুলে উঠবে
একটা হতভম্ব মুক্তোদানা বুকের গহীনে ঝাঁপ দেওয়ার আগে থমকে দাঁড়াবে একটু
টেবোটেবো গালদুটো লাল হয়ে উঠবে আরও
ঘন নি:শ্বাসে নাকের পাটা ফুলে ফুলে উঠবে
একটা হতভম্ব মুক্তোদানা বুকের গহীনে ঝাঁপ দেওয়ার আগে থমকে দাঁড়াবে একটু
এবং এভাবেই কেটে যাবে কিছু বেহিসেবী অনুপল
তারপর একটু সরে দরজা ছেড়ে চুলে এলোখোঁপা বাঁধতে বাঁধতে বলে উঠবে-
সোফায় এসে বোসো,
চা করে আনি দু'কাপ, চিনিছাড়া লিকার
সোফায় এসে বোসো,
চা করে আনি দু'কাপ, চিনিছাড়া লিকার
তখনই বুঝে যাবো তোমার বুকের বন্দর ছেড়ে এজীবনে দ্বীপান্তরে যাওয়া হোলো না আমার
জানি আসলে এসবই এক অবান্তর রূপকথা
তবু স্বপ্নে জেগে থাকে
সেই ভালোবাসার বাতিঘর।।
তবু স্বপ্নে জেগে থাকে
সেই ভালোবাসার বাতিঘর।।
এই বসন্তে / রুদ্র বোস
আমরা আছি
যে যার মতো
তুমি বিপ্রতীপে তো
আমি একান্তর কোণে
যে যার মতো
তুমি বিপ্রতীপে তো
আমি একান্তর কোণে
সন্ধি ও বিচ্ছেদ নিয়ে রিখটার স্কেলে ব্যাকরণ
আমি এসব নিয়ে কিছু বলতে চাইছি না মোটেই
আমি এসব নিয়ে কিছু বলতে চাইছি না মোটেই
দুজনেই বুক ভরে নিচ্ছি
আম বউলের মিঠে ঘ্রাণ
আম বউলের মিঠে ঘ্রাণ
তুমুল বেঁচে আছি
জীবন ঘুরছে রমরমিয়ে
সরীসৃপ
সেই যেখানে গিয়ে বসতাম তুমি আমি
হাতের আঙুলে বাঙ্ময় তুমুল পাগলামি
আলগোছে আদর মাখতো ঠোঁটের তিল
হাতের আঙুলে বাঙ্ময় তুমুল পাগলামি
আলগোছে আদর মাখতো ঠোঁটের তিল
তুমি মুখে বলতে-অসভ্য কোথাকার
চোখ বলত অন্যকথা, দিতো প্রশ্রয়
আর প্রগলভ হোতো গঙ্গার হাওয়া
চোখ বলত অন্যকথা, দিতো প্রশ্রয়
আর প্রগলভ হোতো গঙ্গার হাওয়া
তোমার চুলে মুখ ডুবিয়েছি কতবার
একঢাল বাঁধনছেঁড়া ঘন কালো মেঘ
কামিনী আতপের মতো সুগন্ধি, আহা
একঢাল বাঁধনছেঁড়া ঘন কালো মেঘ
কামিনী আতপের মতো সুগন্ধি, আহা
বুকের ভাঁজে মুখ রাখলে হেসে উঠতো
পরিযায়ী ডানার আহ্লাদী বউ কথা কও
পুটুস ঝোপে মাতাল রোদের দোলাচল
পরিযায়ী ডানার আহ্লাদী বউ কথা কও
পুটুস ঝোপে মাতাল রোদের দোলাচল
শেষ বর্ষায় ঠিক সেখানেই বুনে দিয়েছি
মরসুমী একাকীত্ব আর কৃষ্ণতুলসীর বীজ
একটা সরীসৃপ বাসা বেঁধেছে ওখানেই।।
মরসুমী একাকীত্ব আর কৃষ্ণতুলসীর বীজ
একটা সরীসৃপ বাসা বেঁধেছে ওখানেই।।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন