প্রথম পর্ব : বর্ণ বিষয়ক আলোচনা
বর্ণ বিভিন্ন ধ্বনিকে লেখার সময় বা নির্দেশ করার সময় আমরা যে চিহ্নসমূহ ব্যবহার করা থাকি , তাকে বর্ণ বলে। বর্ণকে আমরা দুভাবে ভাগ করতে পারি - স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ। ১. স্বরধ্বনি চেনার জন্য ব্যবহৃত বর্ণকে স্বরবর্ণ বলে। ২. ব্যঞ্জনধ্বনি চেনার জন্য ব্যবহৃত বর্ণকে ব্যঞ্জনবর্ণ বলে। হসন্ত বা হলন্ত ধ্বনি : আমরা যখন ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণ করি, তখন তার শেষে একটি স্বরধ্বনি ‘অ’-ও উচ্চারণ করি। যেমন, ‘খ
উ চ্চরণ করি (খ + অ =) খ ’। উচ্চারণের সুবিধার জন্য আমরা এই কাজ করি। কিন্তু স্বরধ্বনি ছাড়া ‘খ উচ্চারণ করলে সেটা প্রকাশ করার জন্য ‘খ -এর নিচে যে চিহ্ন (& )দেয়া হয়, তাকে বলে হস্ / হল চিহ্ন। আর যে ধ্বনির পরে এই চিহ্ন থাকে, তাকে বলে হসন্ত বা হলন্ত ধ্বনি বলে আমরা অভিহিত করতে পারি । কোন বর্ণের নিচে এই চিহ্ন দেয়া হলে তাকে বলে হসন্ত বা হলন্ত বর্ণ। বাংলা জানি , বর্ণমালা বাংলা বর্ণমালায় বর্ণ আছে মোট ৫০টি। নিচে বর্ণমালা অন্যান্য তথ্য সহকারে দেয়া হলো- স্বরবর্ণ অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ ঐ* ও ঔ* ৬ ১ ৪ ব্যঞ্জনবর্ণ ক খ গ ঘ ঙ ২ ২ ১ চ ছ জ ঝ ঞ ৪ - ১ ট ঠ ড ঢ ণ ৪ ১ - ত থ দ ধ ন ৩ ২ - প ফ ব ভ ম ৪ ১ - য র ল ৩ - - শ ষ স হ ৩ ১ - ড় ঢ় য় ৎ ৩ - ১ ংঃ ঁ - - ৩ মোট স্বরবর্ণ ১১ মোট ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯ মোট বর্ণ ৫০ পূর্ণ, অর্ধ ও মাত্রাহীন বর্ণ ৩২ ৮ ১০ এই দুটি স্বরধ্বনিকে দ্বিস্বর বা যুগ্ম স্বরধ্বনি বলে। কারণ, এই দুটি মূলত ২টি স্বরধ্বনির মিশ্রণ। যেমন- অ+ই = ঐ, অ+উ = ঔ বা ও+উ = ঔ। অর্থাৎ, বাংলা ভাষায় মৌলিক স্বরধ্বনি মূলত ৯টি। বর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপ; কার ও ফলা প্রতিটি স্বরবর্ণ ও কিছু কিছু ব্যঞ্জনবর্ণ দুটো রূপে ব্যবহৃত হয়। প্রথমত, স্বাধীনভাবে শব্দের মাঝে ব্যবহৃত হয়। আবার অনেক সময় অন্য যায় , কোন বর্ণে যুক্ত হয়ে সংক্ষিপ্ত রূপে বা আশ্রিত রূপেও ব্যবহৃত হ
যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস থেকে বাতাস মুখের বাহিরে আসার পথে কোথাও না কোথাও ধাক্কা খায়, বা বাধা পায়, তাকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। যেমন- ক্, খ্, গ্, ঘ্, ইত্যাদ ধ্বনিগুলো উচ্চারণের সময়তাস জিহবামূল বা কণ্ঠ্যে ধাক্কা খায়। তাই এগুলো ব্ঞ্য়। এখানে লক্ষণীয় ,আ’ বর্ণটি' আমার ' শব্দের মুক্ত rupe. ব্যবহৃত হয়েছে, আবার ‘ম’-র সঙ্গে আশ্রিত হয়ে সংক্ষিপ্ত রূপেও (া ) ব্যবহৃত হয়েছে।
স্বরবর্ণের এই আশ্রিত সংক্ষিপ্ত রূপকে বলে কার, আর ব্যঞ্জনবর্ণের আশ্রিত সংক্ষিপ্ত রূপকে বলে ফলা। উপরে ‘আমার’ শব্দে ‘ম’-র সঙ্গে যুক্ত ‘আ’-র সংক্ষিপ্ত রূপটিকে (া ) বলা হয় আ-কার। এমনিভাবে ই-কার ( w ), ঈ-কার ( x ), উ-কার ( y ), ঊ-কার ( ~ ), ঋ-কার (ৃ ), এ-কার ( † ), ঐ-কার ( ˆ ), ও-কার ( ো), ঔ-কার ৌ) কার। তবে ‘অ’ এর কোন কার নেই। আবার আম্র শব্দে ‘ম’-র সঙ্গে ‘র’ সংক্ষিপ্ত রূপে বা ফলা যুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ সংক্ষিপ্ত রূপটি (ª ) র-ফলা। এরকম ম-ফলা ( ¨ ), ল-ফলা ( ), ব-ফলা ( ^ ), ইত্যাদি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন