খেয়া কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গ্রাম ও নগরজীবনের বৈপিরত্য ফুটিয়ে তুলেছেন : একদিকে সৃষ্টি ,অপর দিকে যেন ধংশ ॥ আলোচক আরিফুল ইসলাম সাহাজি

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সবচেয়ে সেরা তারকা হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।তাঁর একটি স্বরণযোগ্য কবিতা হল 'খেয়া '।যেখানে পৃথিবীর দ্বন্দসংঘাতময় নাগরিক জীবন অন্যদিকে কোমল শান্তির নীড়রূপ গ্রামীণ জীবনের ছবি জীবন্তভাবে বাস্তব হয়ে উঠেছে ।

কবিতার শুরুতেই কবিগুরু গ্রামের শান্তিপ্রিয় মানুষের সহজ সরল জীবনের ছবি অঙ্কন করেছেন ।একটা নাম না জানা নদীর দুপাশে দুটি নাম না জানা গ্রাম ।নাগরিক জীবনের মত পর্যাপ্ত সুখ সুবিধা নেই ।কিন্তু এঁদের নাড়ীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একে অন্যের প্রতি মমত্ব বোধ ,ভালবাসা ।নদী পারাপারের খেয়া নৌকাই হয়ে  উঠেছে দুপারের দুটি গ্রামের মানুষের আত্বীত্বের অবিচ্ছেদ্য বন্ধন ।

অন্যদিকে ,নাগরিক জীবনে অভ্যস্থ মানুষের জীবনে রয়েছে উন্নত সভ্যতার সমস্ত সুখ সমৃদ্ধি ।তবে ,পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ মানব প্রেমের বড় অভাব এখানে ।এরা ক্ষমতার লোভে বসিয়ে দিতে পারে একে অন্যের বুকে ছুরি ।ফলত ,রক্তাত্ব সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে এক সাম্রাজ্যের পতনের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠে অন্য একটি সাম্রাজ্য ।একদিকে সভ্যতার অগ্রগতি যেমন মানুষকে দিয়েছে উন্নতর জীবন ,অন্যদিকে কেড়ে নিয়েছে আবেগ ,মমত্ব বোধের মত মানবিক গুণ সমূহ ।এর ক্ষতিকর দিকগুলো মানব জীবনকে করে তুলেছে বিষাক্ত ।নাগরিক সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে সরে গেছে নেচার ,তৈরী হয়েছে উন্নত মারণাস্ত্র ।পারস্পরিক সম্পর্ক এসে দাঁড়িয়েছে তলানিতে ।

নগর জীবনের এই স্বার্থ সংঘাত এর পাশাপাশি পল্লীবাংলার জীবন কিন্তু অবহমান কাল ধরে একইরকম ।আসলে মানব প্রেমিক দার্শনিক কবি হৃদয়হীন নাগরিক জীবনের থেকে সহজ সরল ,মানবিক পল্লীজীবনের প্রতি হৃদয়ের ভালবাসা ব্যক্ত করেছেন ।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধীবর বৃত্তান্ত নাটকের প্রধান কুশীলব ধীবরের চরিত্র বিশ্লষণ করছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

পথের দাবি গল্পে গিরিশ মহাপাত্রের পোশাক পরিচ্ছেদ ও অদ্ভুত দর্শন বিষয়ক আলোচনা ।

দাম গল্পটি ছাত্র শিক্ষক পবিত্র সম্পর্কের উপর গভীর ছায়াপাত করেছে । মাস্টারমশায় শাসন করতেন , ভালবাসতেন না । এটা ঠিক নয় ' , আলোচনা করছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।