মাকে ছাদ থেকে ফেলে দিল কুলাঙ্গার সন্তান ॥


প্রিয় দৈনিক কলমে প্রকাশিত রাজ্কোটের গুণধর অধ্যাপকের অপকর্মের খবরটি বেশ কয়েকবার পড়লাম ।আধুনিক হচ্ছি আমরা ।ক্রমশ  উত্তর আধুনিকতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছি অনন্তের দিকে ।মানবিকতা ,মমত্ব বোধ ,বিবেক ,অন্তরাত্মার পটপরিবর্তন ও কি সময়ের দাবি ! আমরা ক্রমশ স্বার্থপর হয়ে উঠছি না তো ? এই স্বার্থপরতা এতটায় ধ্বংসাত্মক যে
বৃদ্ধা মাকে ছাদ থেকে ফেলে দিল সন্তান !
তিনি তো শুধু এক অসহায় বৃদ্ধা মায়ের সন্তান নন ।তিনি সমাজের এক বিশিষ্ট অংশ ।তিনি একজন অধ্যাপক ।সমাজ গড়ার কারিগর ।স্ত্রী ও যোগ্য সঙ্গ দিলেন ।কে যেন বলেছিলেন - নারীরাই নারীর প্রধানতম অরি ।শুধু ভূমিকা পরিবর্তন হয় মাত্র ।কখনও শাশুড়ী ,কখনওবা
পুত্রবধূ ।
বধূনির্যাতন নিয়ে আমরা অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা নিয়ে থাকি ।তবে ,পুত্রবধূ এবং নিজসন্তান দ্বারা কোন বৃদ্ধ দম্পতি নির্যাতিত হলে মুখে কুলুপ আঁটি ।কেননা এটা ঘরের সমস্যা ।মা বাবা কখনও চাননা তাঁদের সন্তান নিন্দিত হোক সমাজের মানুষের কাছে ।ফলত: অনেকের শেষজীবন কাটে হয় বৃদ্ধশ্রমে ,নয়তো ছেলে - বৌ এর কাছে লাঞ্ছিত হয়ে ।
মাঝে মাঝে ভাবনাকে বিবেকের শেষ সীমা পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায় ।অন্তরাত্মার কাছে রাখি একগুচ্ছ প্রশ্ন ! আমরা / তোমরা ,কিম্বা গোষ্টীগত ভাবনা গুলো কি ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে ?
আমি /আমরা (আমি ,আমার স্ত্রী ,সন্তান )এই একক সংকীর্ণ অপচেতনার জন্ম দিচ্ছে । আমরা (বাবা - মাকে অসন্মান করা কুসন্তান )ভাবি কি , আমাদের  সন্তানদের আমরা কি শিক্ষা দিচ্ছি ।কাল ওর বৌ এসে যদি আমাদেরকে ছাদ থেকে ফেলে দেয় ।
নচিকেতার সেই অমর গানটির কথা  মনে পড়ছে -
  '' খোকারও হয়েছে ছেলে ,দুবছর হল
    তার তো মাত্র বয়স পঁচিশ ,ঠাকুর মুখ তোলো
     একশো বছর বাঁচতে চাই এখন আমার সাধ
     পঁচিশ বছর পরে খোকার হবে ঊনষাট ।
আশ্রমের এই ঘরটা ছোট ,জায়গা অনেক বেশি
   সেইদিনটার স্বপ্ন দেখি ভীষণ রকম
মুখোমুখি আমি খোকা আর বৃদ্ধাশ্রম ॥''
কোন বাবা - মাকে যেন এ স্বপ্ন দেখতে না হয় ।আসুন না আমরা সন্তানরা একটু বৃদ্ধ বাবা মার  যত্ন নিয় ।আমাদের দেখেই তো শিখবে আমাদের সন্তানরা ।
           
লেখক  পরিচিতি
আরিফুল ইসলাম সাহাজি
গ্রাম :রায়পুর
পোস্ট :চাকলা
দেগঙ্গা ,উত্তর ২৪ পরগনা ,৭৪৩৪২৪
পশ্চিমবঙ্গ,ভারত
আলাপন - ৯৭৩৪৩১৮৯৬৪

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধীবর বৃত্তান্ত নাটকের প্রধান কুশীলব ধীবরের চরিত্র বিশ্লষণ করছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

পথের দাবি গল্পে গিরিশ মহাপাত্রের পোশাক পরিচ্ছেদ ও অদ্ভুত দর্শন বিষয়ক আলোচনা ।

দাম গল্পটি ছাত্র শিক্ষক পবিত্র সম্পর্কের উপর গভীর ছায়াপাত করেছে । মাস্টারমশায় শাসন করতেন , ভালবাসতেন না । এটা ঠিক নয় ' , আলোচনা করছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।