ইলিয়াস গল্পে দেখানো হয়েছে আসল সুখ কী ? অর্থই সুখের একমাত্র সোপান নয় , এই সত্যই প্রতিষ্ঠা দিলেন লিও তলস্তয় ।
লিখছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি । ।
লিও তলস্তয়ের ইলিয়াস নামক গল্পখানি মানবজীবনের একটি সার্বিক সত্য প্রস্ফুটিত হয়েছে । অর্থ আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান অংশ , যার মধ্যে দিয়ে সব কিছু বশ করা সম্ভব হয় । তবে এই অর্থ কী চিরস্থায়ী ? অর্থাৎ আজ যিনি অর্থবান , কালকেও থাকবেন এমন তো নয় । ইলিয়াস গল্পটি গভীর অভিনিবেশে পাঠ করে একটা মহৎ সত্য অনুধাবিত হয় মনের গভীর কোনে , অর্থ নয় জীবনের সবটুকু , হয়তো মূল্যবান অংশ , তবে সবটুকু নয় । একথাখানিই যেন তলস্তয়ে বলতে চেয়েছেন । ছোট করে গল্পটির বিষয়বস্ত্ত একটু শুনিয়ে দিই , তাহলে বিষয়টি হৃদয়জাত হবে । ইলিয়াস নামক একজন কৃষক ছিলেন , উফা প্রদেশের বাসকির নামক গ্রামে তাঁর বাস । অত্যন্ত কর্মঠ একজন মানুষ । বাবা মারা যাবার সময় তাঁর সম্পদ ছিল সাতটা ঘোটকী, দুটো গরু , কুড়িটা ভেড়া । এই সম্পদ নিয়েই শুরু হয় ইলয়াসের জীবনের লড়াই । পরবর্তী ৩৫ বছর কঠোর পরিশ্রম করে তিনি প্রচুর সম্পত্তির মালিক বনে যান । দুশ ঘোড়া , দেড়শ গরু মোষ , বারটা ভেড়া , ছেলে মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার । অর্থর সঙ্গে সঙ্গেই সমান্তরাল ভাবে সমাজিক প্রতিপত্তি বাড়লো ইলিয়াসের । সন্মান সাথে সাথে ঈর্ষাও জুটলো কপালে । সবাই বলতে থাকল ইলিয়াস ভাগ্যবান মানুষ , কোন কিছুর অভাব নেই ।
ছেলে মেয়েরা বড় হওয়ায় বিয়ের ব্যবস্থা করলেন ইলিয়াস । এই বিয়ের পরপরই যেন শনি ঢুকল তাঁর পরিবারে । ছেলেদের মধ্যে শুরু হলো মারামরি । অতিষ্ট হয়ে ইলিয়াস তাঁদেরকে দিলেন বাড়ি থেকে তাড়িয়ে । নিজের সম্পত্তি থেকে কিছু অংশ তাঁদের দিলেন ইলিয়াস , ফলে সম্পত্তিতেও পড়লো টান । মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা সেই বছরেই নামল দুর্ভিক্ষ । মোড়ক লাগলো গোশালায় । মারা গেল একে একে ইলিয়াসের গরু ছাগল মোষ । আবার গরীব হয়ে গেলেন এবার ইলিয়াস । বিতাড়িত পুত্র দুই চলে গেছে অনেক দূর । মেয়েটি গেছে মরে । কে দেখবে , নেবে ভরণপোষনের দায় ! শেষে মহম্মদ শা নামক একজন সহৃদয় মধ্যবিত্ত মানুষ আশ্রয় দিলেন ইলিয়াস ও স্ত্রীকে ।
একদিন মহম্মদ শার বাড়িতে এলো দূর দেশ থেকে একদল আত্মীয়স্বজন । ইলিয়াসকে দেখিয়ে মহম্মদ শা অতিথিদের উদ্দেশ্য বললেন , ইনি হলেন মান্যবর ইলিয়াস , একসময় তিনি ছিলেন এ তল্লাটের সবচেয়ে সেরা ধনী । অতিথিরা অবাক হলেন , তারা ইলিয়াসকে চোখে না দেখলেও নাম শুনেছে অনেক । জীবন সম্পর্কে ইলিয়াস ও তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে কিছু শুনতে চাইলেন অতিথিরা । তাঁদের উদ্দেশ্য ইলিয়াস যে কথাখানি বলেছিলেন , তা আমাদেরকে ভাবায় , বিচলিত করে । আগে ধনী ছিলেন , এখন তো গরীব , কোন অবস্থা ভাল ছিল এ কথার উত্তরে ইলিয়াসের স্ত্রী জনান -
''অর্ধশতাব্দী ধরে আমরা সুখ খুঁজেছি ; যতদিন ধনী ছিলাম , কখনও সুখ পাইনি । কিন্তু আজ এমন সুখের সন্ধান আমরা পেয়েছি যে আর কিছুই চাই না । ' '
কথাটি গভীর অর্থবহ । যতদিন ধনী ছিলেন ইলিয়াস , জীবনে ব্যস্ততা ছিল হয়তো , তার সঙ্গে ছিল হিংসা , অহংকারের চোরাস্রত । স্বামী স্ত্রীর মাঝেও তা একটা ব্যবধান করে রেখেছিল । সে কথায় গল্পের একত্র বলেছেন ইলিয়াসের স্ত্রী -
''যখন ধনী ছিলাম , বুড়ো বা আমার এক মুহূর্তের জন্যও শান্তি ছিল না , কথা বলবার সময় নেই । অন্তরের কথা ভাববার সময় নেই , ঈশ্বরের কাছে প্রাথনার সময় নেই । দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না । ' '
সত্যই বাংলার একখানা প্রবাদের কথা মনে পড়ে গল্পটি পাঠ করতে গিয়ে , অর্থ অনর্থর কারণ । পুরো গল্পে এই বোধটাই বিচলিত করে আমাদের । ।
লিও তলস্তয়ের ইলিয়াস নামক গল্পখানি মানবজীবনের একটি সার্বিক সত্য প্রস্ফুটিত হয়েছে । অর্থ আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান অংশ , যার মধ্যে দিয়ে সব কিছু বশ করা সম্ভব হয় । তবে এই অর্থ কী চিরস্থায়ী ? অর্থাৎ আজ যিনি অর্থবান , কালকেও থাকবেন এমন তো নয় । ইলিয়াস গল্পটি গভীর অভিনিবেশে পাঠ করে একটা মহৎ সত্য অনুধাবিত হয় মনের গভীর কোনে , অর্থ নয় জীবনের সবটুকু , হয়তো মূল্যবান অংশ , তবে সবটুকু নয় । একথাখানিই যেন তলস্তয়ে বলতে চেয়েছেন । ছোট করে গল্পটির বিষয়বস্ত্ত একটু শুনিয়ে দিই , তাহলে বিষয়টি হৃদয়জাত হবে । ইলিয়াস নামক একজন কৃষক ছিলেন , উফা প্রদেশের বাসকির নামক গ্রামে তাঁর বাস । অত্যন্ত কর্মঠ একজন মানুষ । বাবা মারা যাবার সময় তাঁর সম্পদ ছিল সাতটা ঘোটকী, দুটো গরু , কুড়িটা ভেড়া । এই সম্পদ নিয়েই শুরু হয় ইলয়াসের জীবনের লড়াই । পরবর্তী ৩৫ বছর কঠোর পরিশ্রম করে তিনি প্রচুর সম্পত্তির মালিক বনে যান । দুশ ঘোড়া , দেড়শ গরু মোষ , বারটা ভেড়া , ছেলে মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার । অর্থর সঙ্গে সঙ্গেই সমান্তরাল ভাবে সমাজিক প্রতিপত্তি বাড়লো ইলিয়াসের । সন্মান সাথে সাথে ঈর্ষাও জুটলো কপালে । সবাই বলতে থাকল ইলিয়াস ভাগ্যবান মানুষ , কোন কিছুর অভাব নেই ।
ছেলে মেয়েরা বড় হওয়ায় বিয়ের ব্যবস্থা করলেন ইলিয়াস । এই বিয়ের পরপরই যেন শনি ঢুকল তাঁর পরিবারে । ছেলেদের মধ্যে শুরু হলো মারামরি । অতিষ্ট হয়ে ইলিয়াস তাঁদেরকে দিলেন বাড়ি থেকে তাড়িয়ে । নিজের সম্পত্তি থেকে কিছু অংশ তাঁদের দিলেন ইলিয়াস , ফলে সম্পত্তিতেও পড়লো টান । মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা সেই বছরেই নামল দুর্ভিক্ষ । মোড়ক লাগলো গোশালায় । মারা গেল একে একে ইলিয়াসের গরু ছাগল মোষ । আবার গরীব হয়ে গেলেন এবার ইলিয়াস । বিতাড়িত পুত্র দুই চলে গেছে অনেক দূর । মেয়েটি গেছে মরে । কে দেখবে , নেবে ভরণপোষনের দায় ! শেষে মহম্মদ শা নামক একজন সহৃদয় মধ্যবিত্ত মানুষ আশ্রয় দিলেন ইলিয়াস ও স্ত্রীকে ।
একদিন মহম্মদ শার বাড়িতে এলো দূর দেশ থেকে একদল আত্মীয়স্বজন । ইলিয়াসকে দেখিয়ে মহম্মদ শা অতিথিদের উদ্দেশ্য বললেন , ইনি হলেন মান্যবর ইলিয়াস , একসময় তিনি ছিলেন এ তল্লাটের সবচেয়ে সেরা ধনী । অতিথিরা অবাক হলেন , তারা ইলিয়াসকে চোখে না দেখলেও নাম শুনেছে অনেক । জীবন সম্পর্কে ইলিয়াস ও তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে কিছু শুনতে চাইলেন অতিথিরা । তাঁদের উদ্দেশ্য ইলিয়াস যে কথাখানি বলেছিলেন , তা আমাদেরকে ভাবায় , বিচলিত করে । আগে ধনী ছিলেন , এখন তো গরীব , কোন অবস্থা ভাল ছিল এ কথার উত্তরে ইলিয়াসের স্ত্রী জনান -
''অর্ধশতাব্দী ধরে আমরা সুখ খুঁজেছি ; যতদিন ধনী ছিলাম , কখনও সুখ পাইনি । কিন্তু আজ এমন সুখের সন্ধান আমরা পেয়েছি যে আর কিছুই চাই না । ' '
কথাটি গভীর অর্থবহ । যতদিন ধনী ছিলেন ইলিয়াস , জীবনে ব্যস্ততা ছিল হয়তো , তার সঙ্গে ছিল হিংসা , অহংকারের চোরাস্রত । স্বামী স্ত্রীর মাঝেও তা একটা ব্যবধান করে রেখেছিল । সে কথায় গল্পের একত্র বলেছেন ইলিয়াসের স্ত্রী -
''যখন ধনী ছিলাম , বুড়ো বা আমার এক মুহূর্তের জন্যও শান্তি ছিল না , কথা বলবার সময় নেই । অন্তরের কথা ভাববার সময় নেই , ঈশ্বরের কাছে প্রাথনার সময় নেই । দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না । ' '
সত্যই বাংলার একখানা প্রবাদের কথা মনে পড়ে গল্পটি পাঠ করতে গিয়ে , অর্থ অনর্থর কারণ । পুরো গল্পে এই বোধটাই বিচলিত করে আমাদের । ।
গল্পটি ভালো করে পড়ে কিছু লিখবেন । আপনি তো দেখি নতুন গল্প লিখেছেন । এভাবে সকলের কাছে হাস্যকর হবেন না ।
উত্তরমুছুন