সোশাল মিডিয়ার সর্বগ্রাসী হাঁ , সমাজিক অবক্ষয়ের জন্ম দিচ্ছে , ক্ষতিসাধন করছে শরীর ও মনকেও । । আরিফুল ইসলাম সাহাজি । ।




বর্তমান সময় নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রিক অংশ সোশাল মিডিয়া , এ বিষয়ে দ্বিমত হওয়া উচিৎ নয় । এক সর্বগ্রাসী হাঁ করে মানুষের জীবনকে খাচ্ছে রোজ । প্রত্যহক্ষণের ভালো লাগা মন্দ লাগা , আনন্দ - উৎসবের উন্মাদনা জমা হয় সোসাল মিডিয়ার পাতায় । বিষয়টি নিঃসন্দেহে উদ্বেগের । সোশাল মিডিয়ার এই ভয়ঙ্কর রকম বাড়াবাড়ি রীতিমত চিন্তিত হয়ে পড়েছেন বিশ্বের সমাজ বিজ্ঞানীগণ । তবে গণমানবের সেদিকে বিশেষ হোলদোল আছে বলে তো মনে হয় না , বরং সব বয়সীরাই সদা ব্যস্তই থাকছেন সোসাল মিডিয়ার খোলা বাজারে নিজেকে আরও একটু বেশি দামি করে তুলতে । পুরো বিশ্বের প্রায় সিংহভাগ মানুষ এখন মোটামুটি মুঠোফোন ব্যবহার করেন । ওই বিপুল জনসংখ্যার মানুষ আবার কোন না কোনভাবে সোশাল মিডিয়ার উপভোক্তা হিসাবে নিজেদের নাম লিখিয়ে বসে আছে । একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে , ওই বিশাল জনমানবের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মানুষ (৭৭ শতাংশেরও বেশি ) ফেসবুক ব্যবহার করেন । বাকি জনতা অন্যান্য সোশাল সাইটগুলো ব্যবহার করেন , যেমন হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার , ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি । ফেসবুক ব্যবহারকারী বোদ্ধাগণ যে অন্য মাধ্যমগুলো ব্যবহার করেন না , একথা বলছি না । তবে সবচেয়ে শক্তিশালী সোশাল সাইট যে ফেসবুক , এ বিষয়ে একেবারেই দ্বিমত নেই । 

সোশাল মিডিয়ার বহুবিধ উপকারিতা রয়েছে , এই বিষয়টি অস্বীকার করবার দুঃসাহস কেউই করবেন না । সত্যি বলতে আলাদা এক রুপকথার জগৎ এর আস্বাদ দেয় এই সমাজিক মাধ্যমগুলো । বাস্তবে যে ব্যক্তি , আদর্শ , প্রতিষ্ঠানের সংস্পর্শ আসাটাই স্বপ্নের অধিক কল্পনার অংশ মনে হয় , সমাজিক সাইটগুলোতে খুব সহজেই পৌঁছানো যায় সেই ব্যক্তির কাছাকাছি । দূরত্ব অতীব তুচ্ছ বস্ত্ত বলে ভ্রম হওয়ায় এখন স্বাভাবিক , নেই কোন কাঁটাতারেরও বেড়া , ফলত নানা জাতি , বর্ণ , ভাষা ও দেশীয় লোকাচার মিলে মিশে অন্য এক ভুবনের সন্ধান দিতে সক্ষম হয়েছে এই মাধ্যম সমূহ । ভাবের পারস্পরিক আদান প্রদান , সমাজিক অসাম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রতিস্পর্ধী মনোভাব জন্মও নেয় সমাজিক মাধ্যমগুলোর পাতায় । অর্থাৎ আমাদের সর্বস্ব , চিন্তাভাবনা , সফলতা , ব্যর্থতা সব কিছুই এক আলোচনার টেবিলেই সেরে নেওয়া যায় বিশ্বজনপ্লাবনের সঙ্গে । সাধারণ চোখে বিষয়টি মঙ্গলময় মনে হলেও সমাজবিজ্ঞানীগণ বিষয়টির মধ্যে সমাজিক অধঃপতনের সূক্ষ্ণ ইঙ্গিত পাচ্ছেন , তাঁদের অভিমত অনুযায়ী , সমাজিক মাধ্যম সমূহ আমাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে । অর্থাৎ সমাজিক স্বতন্ত্র মানুষের নিজস্ব যে প্রজ্ঞা তা আর একক থাকছে না , একটা গণ' র রুপ ধারণ করছে । গভীরভাবে অনুধাবন করলে বিষয়টি সত্যই উদ্বেগের বটে , সোশাল মিডিয়ায় এখন অনেকাংশে কোন বিষয়ের ভালো মন্দ দিকগুলো এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যে , আলাদা করে আর ভেবে বুঝে নিতে হয় না কোনটা ন্যায় বা অন্যায় । ধারণাটি পরিস্কার করা দরকার , ধরুন আপনি একটি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন , কোনপ্রকারে আপনার মুঠোফোনটি হ্যাক যদি হয় , তাহলে দূরে বসে হ্যাকার আপনার ফোনটি আপনার মতই ব্যবহার করতে পারবেন । এই বিষয়টিও তেমনি , সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে থাকতে থাকতে আপনার প্রজ্ঞা , বোধগম্যতাও অন্য কারও দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে । ফলে তাঁর কিম্বা তাঁদের চোখ দিয়েই কিন্তু আপনি দেখছেন , তাই অনেক সময় আপনার কাছে অন্যায়টাই ন্যায় মনে হতে পারে । একটা বাস্তব উদাহরণ দেওয়া যাক , গত কয়েকদিন আগেই নিউজিল্যান্ড ট্র্যাজেডি ঘটেছে বিষয়টি প্রায় সকলেই জানেন , ৪৯ জন মুসুল্লি শহীদ হয়েছেন এক শ্বেতাঙ্গ জঙ্গির গুলিতে । ওই দুঃখজনক বিষয়টি নিয়েও অনেককেই উল্লাস করতে দেখলাম , যারা এত উল্লাসিত হয় এই ধরনের দুংখজনক ঘটনাতেও , তারা আর যায়হোক সাধারণ মানুষ নয় , দীর্ঘদিনের ট্রেনিংপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী দাঙ্গাকারীদের দোসর । অর্থাৎ তাদের নিজস্ব বিবেক বুদ্ধি একটি সম্প্রদায়িক শক্তির কাছে বন্ধক দেওয়া আছে বলেই নিজেদেরকে এমন পাশবিক পর্যায়ে তুলতে তারা সক্ষম হয়েছে  । 

সমাজিক মাধ্যমগুলোর এমন সর্বগ্রাসী রুপ কিন্তু একদিনে প্রকট হয়নি । একসময় চিঠিপত্রই ছিল একমাত্র সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম । সাল ১৭৭২ সালকে মোটামুটি সোশাল নেটওয়ার্কিং এর  জন্মলগ্ন হিসাবে ধরা হয় । ওই বছর শুরু হয় টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা , যা একটি সমাজিক যুগান্তরই বলা যায় । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্বে টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা নির্ণয়ক অংশ হয়ে উঠেছিল , অর্থাৎ যে পক্ষ এই সমাজিক মাধ্যমকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছিলেন , তাঁরা অন্যদের থেকে কয়েক ক্রোশ এগিয়ে থাকতেন । এরপর  অষ্টাদশ শতাব্দী নাগাদ একপ্রকার সমাজিক বিপ্লব ঘটল , চালু হলো টেলিফোন এবং রেডিও । দূরের পৃথিবী হঠাৎ কাছাকাছি এসে দাঁড়ালো । সাল ১৯৪২ এ সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মূল নিয়ন্ত্রক কম্পিউটার আবিস্কার করে যুগান্তর আনলেন চার্লস ব্যাবেজ , অফিস আদালত , কাছারিতে দখল নিল যন্ত্রমানব কম্পিউটার । একটি কম্পিউটার থেকে কাছে দূরের অন্য কম্পিউটারে তথ্য আদান প্রদানের তাগিদেই জন্ম হলো ইন্টারনেটের । মানবের পদার্পণ ঘটল এক উত্তরআধুনিক যুগে , ১৯৯৭ নাগাদ শুরু হয় প্রথম সোশাল মিডিয়া সাইট । ২০০০ সালে এল  ব্লগ এবং অসম্ভব জনপ্রিয় হয়ে উঠল এই সমাজিক মাধ্যমটি । ২০০৪ সালের ২৪ জানুয়ারি বাজারে এল আরও এক জনপ্রিয় সমাজিক মাধ্যম অরকুট । তার মাত্র দুইবছর পর অর্থাৎ সাল ২০০৬ এ জন্ম হয় ফেসবুক এবং টুইটারের । একে একে হোয়াটসঅ্যাপ , ম্যাসেঞ্জার , আরও কতশত । পরের টুকু তো ইতিহাস । 

সমাজিক মাধ্যমগুলোর এই উন্মাদ জনপ্রিয়তা গণমানুষের  চলমান জীবনকে অনেকটাই পাল্টে দিতে সক্ষম হয়েছে । গোপনীয়তার বিন্দুমাত্র বালাই নেই , অর্থাৎ ব্যক্তিত্বের যে প্রধান সত্ত্বা নিজস্বতা , কোথাও যেন তার খামতি ঘটছে । ঘুম থেকে উঠে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বমুহুর্তর আপডেট ভালো মন্দ না বুঝেই পোস্টাতে ব্যস্ত থাকছে সবাই  । বেড়াতে যাচ্ছেন , এখন আমরা অমুক স্টেশনে বসে বাদাম খাচ্ছি , সঙ্গে একখান গ্রুপ সেলফি , কিম্বা গাড়ি নেই শুনশান রাস্তা দিয়ে একাকী হাঁটছি । লাইক কমেন্টের লোভ , নিজেকে দামি করে পরিবেশন করবার তাগিদ এতটাই প্রবল যে , নিজের নিরাপত্তা টুকুর তোয়াক্কাও করছেন না সাধারণ জন মানুষ । অনেকে বিপদেও পড়েন , পড়াটাও তো স্বাভাবিকই । সমাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী সকলের মন তো সাদা নয় , অনেকেরই সাদা মনে কাদা থাকেই , আপনি যদি পোস্ট দেন , একটাও  গাড়ি ঘোড়া নেই , শুনশান রাস্তায় হাঁটছি একা । সঙ্গে একটা ছবি তো দেওয়া একপ্রকার বাধ্যতামূলক , ছবি তো অনেক কথায় বলে , আপনার সঙ্গে কি আছে , মোবাইল কত দামি , হাতঘড়িটা কোন কোম্পানির ইত্যাদি । এখন যদি আপনি বিপদে পড়েন , তাহলে দায়টা কার ? 
আরও একটা শিরঃপীড়ার কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন , সোশাল মিডিয়ার এক অনন্য সংযোজন চ্যাটিং , নিঃসন্দেহে এটি মন্দ কোন বিষয় নয় । আমরা কথা বলতে ভূলছি তো , সেই দিক থেকে সংক্ষেপে নিজেকে প্রকাশ করবার একটা উত্তম মাধ্যম চ্যাট । তবে সব বিষয়ের ভালো মন্দ ব্যবহারকারীর হাতে , অনেকেই এই চ্যাটিংকে চরম নোংরামির পর্যায়ে নামিয়ে আনছে । দৃষ্টান্ত দেওয়া প্রয়োজন , প্রেমিক প্রেমিকা ভিডিও চ্যাটিং করেন না , এমন যুগল খুঁজে পাওয়া বেশ মুশকিল । অনেকগুলো কামনা বাসনার মধ্যে যৌনতা একটি প্রধানতম প্রবৃত্তি , আমরা কেউই যৌনতাকে অস্বীকার করবার দুঃসাহস দেখাতে পারি না । প্রেমেরও অনেক পর্ব উপপর্ব থাকে , একসময় প্রেম মন থেকে নেমে আসে দেহে । যুগলরা অনেকেই করেনকি ভিডিও চ্যাটে ধারণ করেন উত্তেজক মুহুর্তগুলো । প্রেম যেখানে বাসা বাঁধে , বিচ্ছেদও সেখানে সংগোপনে আত্মগোপন করে থাকে । ওই যুগলের মধ্যে যখনই বিচ্ছেদ দাঁড়িয়ে যায় আড়াআড়ি , অনেকেই সেই ভিডিও চ্যাট দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে , এমনকি সমাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে মহালঙ্কাকান্ড করে বসেন । 

সমাজিক সাইটগুলোর   আরও একটি মহাক্ষতিকর দিক রয়েছে । বিদ্বেষ , ঘৃণা ছড়ানোর বিশ্বস্ত মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে সমাজিক মাধ্যম সমূহ ।   অনগ্রসর মানসিকতার হিংস্র মানুষজন অত্যন্ত সচেতনভাবে  এই কাজগুলো করছে । তাদের হাতিয়ার ভুয়া খবর , মিথ্যা ভাষণ আর প্রতিশ্রুতি । সমাজিক মাধ্যমগুলোতে যেহেতু তেমন কোন স্ক্যানার নেই , ফলে দাঙ্গাবাজ , প্রতারকদের উন্মুক্ত দ্বার হয়ে উঠেছে এই সাইটগুলো  । প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কিছু মানুষ প্রতিমূহূর্ত বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে । ভুয়াখবর , সাম্প্রদায়িক মনগড়া তথ্য পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে দেশীয় ইতিহাস , কৃষ্টি কালচারের মিথ্যাচার করছে । সাধারন জনমানব জানা অজানায় তাদের ফাঁদে পা দিচ্ছেন ।  ইসলাম ও মুসলিম বিশ্ব সম্পর্কিত অসত্য , বিভ্রান্তিকর বাজার গরম করা বিষয় উপস্থাপনের মধ্যে দিয়ে মূল বিষয় সমূহ থেকে নজর সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে ।  সন্ত্রাসের মুখ হিসাবে তারা ইসলামকে উপস্থাপন করছে ।  মুসলিমদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই । ভারতে থেকেও কেন পাকিস্থানের পতাকা তোলেন , এ বিষয়েও অনেকেই জানতে চান । আসলে তাদের অজ্ঞতা কিম্বা না জানার সদিচ্ছা থেকেই তারা ভূলে যান ইসলামী পতাকা আর পাকিস্থানের জাতীয় পতাকা প্রায় সমগোত্রীয় । ফলে ইসলামী পতাকা দেখে পাকিস্থানের পতাকা ভেবে বাজার গরম করা হয় ইচ্ছে করেই । নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে খুবই সচেতনভাবে লড়িয়ে দেয় হিন্দু মুসলিম দুসম্প্রদায়কে ।সম্ভবতঃ নেপোলিয়ন একটি উক্তি করেছিলেন , দীর্ঘসময় শাসন করতে হলে নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে মানুষকে ধর্মে ধর্মে লড়িয়ে দাও  । সফলতা আসবেই । 


বিশ্বের ৩০০ কোটি মানুষ এই মুহুর্তে কোন না কোনভাবে সমাজিক মাধ্যম সমূহের সঙ্গে যুক্ত আছেন , যা মোট জনসংখ্যার (সাড়ে ৭০০ কোটি ) ৪৩ শতাংশেরও বেশি । এত বিরাট জনমানুষের নিকট সমাজিক মাধ্যম সমূহের দ্বার উন্মুক্ত হওয়ার প্রধানতম হেতু হল , স্মার্ট ফোন এবং ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা । অনেকেই বাস্তবের ঘর থেকে সময় চুরি করে সমাজিক মাধ্যমগুলোতে অতি সক্রিয় ওঠেন । সাধারণ একটা ধারণা প্রচলিত আছে , সমাজিক গণমাধ্যমগুলোতে ভয়ঙ্কররকম জড়িয়ে বিশ্বনাগরিক হয়ে ওঠায় মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যায় । কিন্তু এ বিষয়ে গবেষণা বলছে ঠিক ভিন্ন কথা , সমাজিক মাধ্যমগুলো ব্যবহারের ফলে মানসিক চাপ কমা তো দুরস্ত , তা বাড়িয়ে বিপদজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি হয় । সাল ২০১৫ তে পিউ রিসার্চ সেন্টারের তরফে একটি সমীক্ষা করা হয় , প্রাপ্ত যে রিপোর্ট বিশ্লেষকগণ দিয়েছেন , সেখানে দেখা যাচ্ছে বহুক্ষেত্রেই সমাজিক মাধ্যমগুলো এক সমাজিক অবক্ষয়ের জন্ম দিচ্ছে । বাড়ছে মানসিক অবসাদ ও হতাশা । শুধু মন নয় , অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্তিতে ক্ষতি হয়  শরীরও । বিশেষ  করে শিশুদের ভার্চুয়াল জগতে অবিরত দ্বার ,নিসন্দেহে উদ্বেগের বিষয় ।বড়দের সঙ্গে ছোটরাও সমান সক্রিয় থাকছে সোশাল সাইটগুলোর পাতায় । সাধারণত তারা কোন স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে , ওই ফোনগুলোতে ক্ষতিকর রেডিয়েশন পাওয়ার থাকে ।  বড়দের তুলনায় শিশুদের রেডিয়েশন শোষণ শতকরা ৬০ ভাগ বেশি ।রেডিয়েশন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় ।সম্প্রতি সুইডেনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যাদের বয়স ২০ বছরের কম অন্যদের তুলনায় ব্রেন ক্যান্সারের সম্ভবনা ৫ গুণ ।এছাড়াও ,অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্তি অ্যটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভিটি নামক মানসিক রোগের সৃষ্টি করে ।যুক্তরাষ্টের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্টোল এন্ড প্রিভেনশানের সমীক্ষানুযায়ী ৪ - ১৭ বছর বয়সি প্রায় ৬০ লক্ষ শিশু এই এডিএইচডি নামক মানসিক রোগে আক্রান্ত ।এই ধরনের শিশুদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয় ,যেমন 
তারা আত্মকেন্দ্রিক ,অসহনশীল ও অসামাজিক আচরণ করে ।বাইরের পরিবেশের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করতে চাই না।বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় ,যেমন মাথা ব্যথা ,চোখ দিয়ে জল পড়া ,দৃষ্টি শক্তি ক্ষীণ হয়ে যায়  ।পরবর্তীতে ডায়াবেটিস ,উচ্চ রক্তচাপ ,স্টোক সহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সমুখে পড়তে পারে ।সামাজিক জীবনেও ক্রমশ একাকী হয়ে পড়ে ।জীবনের গুণগত মান নামতে থাকে ।এক সময় সমাজ জীবন থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়ে এডিএইচডি আক্রান্ত শিশুরা ॥

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধীবর বৃত্তান্ত নাটকের প্রধান কুশীলব ধীবরের চরিত্র বিশ্লষণ করছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

পথের দাবি গল্পে গিরিশ মহাপাত্রের পোশাক পরিচ্ছেদ ও অদ্ভুত দর্শন বিষয়ক আলোচনা ।

দাম গল্পটি ছাত্র শিক্ষক পবিত্র সম্পর্কের উপর গভীর ছায়াপাত করেছে । মাস্টারমশায় শাসন করতেন , ভালবাসতেন না । এটা ঠিক নয় ' , আলোচনা করছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।