প্রিয় কথাকার সৈয়দ মুজতবা আলি । আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।


সৈয়দ মুজতবা আলি বাংলা সাহিত্যের একজন প্রথিতযশা কথা সাহিত্যিক । বহুভাষাবিদ পন্ডিত মুজতবা আলির কলমের কালিতে অবাঞ্ছিত ভারতীয় চরিত্রগণ অনুপম আলেখ্য রুপে চিত্রিত হয়েছেন । এই মহান কথাকারের জন্ম সাল ১৯০৪ এ , দিনটি ছিল ১৩ সেপ্টম্বর , স্থান বর্তমান আসামের করিমগঞ্জ জেলা । পিতৃদেব সৈয়দ সিকান্দার আলি , জননীর নাম আনতুন মানানন খাতুন । মুজতবা অসম্ভব মেধাবী ছিলেন তাঁর ছাত্রজীবনে , বিশ্বভারতী থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করার পর , জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ধর্মশাস্ত্রের উপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন কৃতিত্বের সঙ্গে । 

কর্মসূত্রে দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলেন মুজতবা । এই সুযোগ তাঁকে সমৃদ্ধ করেছে । সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থান এবং চরিত্রের সংস্পর্শ মুজতবাকে দিয়েছিল এক অনন্য অভিজ্ঞান , এই অভিজ্ঞানই তিনি প্রয়োগ করেছিলেন সাহিত্য সৃস্টি পূর্ণকাজে । একই সঙ্গে দেশ এবং বিদেশের একাধিক ভাষা চর্চা করবার এক মহাঝোঁক ছিল মুজতবা আলি । অন্ততঃ ১৫ টি ভাষা জানতেন তিনি । বাংলা , সংস্কৃত , ইংরেজি , ফরাসী , জার্মান , ইতালি , হিন্দি , গুজরাটি সহ অনন্য ভাষার পন্ডিত হিসাবে তিনি সমাদিত ছিলেন । পান্ডিত্যের গাম্ভীর্য নয় , বরং মুজতবা আলির কৌতুকপ্রিয়তা , রসরসিকতা এবং আন্তৰ্জাতিক বোধের সঙ্গে বাঙালি ঘরানোর এক অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটেছিল তাঁর সাহিত্য কর্মে । 

মুজতবা আলির সাহিত্যকর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল , ' দেশে বিদেশে , প্রকাশকাল ১৯৪৯ ,পঞ্চতন্ত্র ,  প্রকাশকাল ১৯৫২ ,ময়ূরকণ্ঠি , প্রকাশকাল ১৯৫৩ ,পূর্ব পাকিস্থানের রাষ্ট্রভাষা , প্রকাশকাল ১৯৫৬ ,জলে ডাঙায় ১৯৫৭ , ধূপছায়া ১৯৫৮ ,চতুরঙ্গ ১৯৬০ , ভবঘুরে ও অন্যান্য ১৯৬২ ,বহু বিচিত্র ১৯৬২ ,বড়বাবু ১৯৬৬ ,দু হারা ১৯৬৬ , হিটলার ১৯৭১ , পরিবর্তনে অপরিবর্তনীয় ১৯৭৬ প্রভৃতি । 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধীবর বৃত্তান্ত নাটকের প্রধান কুশীলব ধীবরের চরিত্র বিশ্লষণ করছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

পথের দাবি গল্পে গিরিশ মহাপাত্রের পোশাক পরিচ্ছেদ ও অদ্ভুত দর্শন বিষয়ক আলোচনা ।

দাম গল্পটি ছাত্র শিক্ষক পবিত্র সম্পর্কের উপর গভীর ছায়াপাত করেছে । মাস্টারমশায় শাসন করতেন , ভালবাসতেন না । এটা ঠিক নয় ' , আলোচনা করছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।