পোস্টগুলি

জীবন জেগে আর্তনাদ করে যে স্টেশনে , আমি তার নাম দিয়েছি পৃথিবী ।মরা পৃথিবীর স্বরুপ বিশ্লেষন করেছেন আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

ছবি
এমনটি ছিল না পৃথিবী ।  পিতামহ মাতামহদের কাছে শোনা পৃথিবী যেন অন্যকোন পৃথিবী । মমত্ববোধ , মানবিকতার এক অনন্য ফাল্গুধারায় সিক্ত ছিল সত্তর আশি নব্বইয়ের দশকগুলো । বাবাদের কাটানো শৈশব যৌবনের দিনগুলোও তেমন মন্দ ছিল না । শোনামতে এত্তব্যাপক নোংরা রাজনীতিক পরিআবহ থেকে বেশ কিছুটা মুক্ত ছিল সেই সব দিনগুলো । রাজনীতিক কদর্যতা যে ছিল না , সেটা বললে কিছুটা ভুল বলা হবে বইকি ! তবে কিছু পঙ্কিলতা থাকলেও জনজীবন এত্তটা কলুষিত ছিল না । আমাদের শৈশবের দিনগুলোতেও মানুষের  এতটা কদর্য নগ্নরুপ দেখেনি । গণমানুষের প্রতি ভালোবাসা , মমতা তখনও কিছুটা অক্ষুন্ন ছিল । হঠাৎ করেই , অন্ততঃ গত সাত আট বছরে মানবিকতার দৃষ্টিকোন থেকে পৃথিবীতে এক ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্যগোচর হতে দেখছি । বেশ কয়েকটা সম্প্রদায়গত গণহত্যা এই কয় বছরের ভিতর আমরা সংঘটিত হতে দেখলাম । হিটলারের ইহুদি নিধনের পর সবচেয়ে বড়ো সম্প্রদায়গত গণহত্যা রোহিঙ্গা জনগোষ্টির উপর নির্যাতন , এই বিষয়টি কেউই অস্বীকার করতে পারবেন না । একেবারেই নির্বিঘ্নে কোন প্রতিরোধ ছাড়াই  শান্তিতে নোবেল পাওয়া সুচির সরকার এই হিংস্র কর্মকান্ডকে রুপ দিতে পারল । চীনের ...

দ্রব্যমূল্য আগুন ছোঁয়া , অথচ কৃষকের ঘরে ফসল উঠলে মিইয়ে পড়ে দাম । এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

ছবি
দ্রব্যমূল্যের উৎপটাং দামে জেরবার নিম্ন মধ্য উচ্চ সব বিত্তই । শান্তি এক প্রকার অধরাই । বাজারে গেলে খাদ্য দ্রব্যের দাম শুনে দাঁতকপাটি এঁটে যাওয়ার মত অবস্থা । দশ বারো হাজার টাকা উপার্জন করা মধ্যবিত্ত বাঙালির সংসার ফুটোফাটা কলসি সদৃশ । ওই টাকাতে কিভাবে চলবে সংসারের গাড়ি ? ভরবে কী বাজারের ব্যাগ ? প্রসঙ্গক্রমেই আমার এক  বন্ধুর কথা মনে পড়ছে । বিষয়টি বললে বিষয়খানির গাম্ভীর্যতার জায়গাটা কিছুটা ঋজু হবে । বেশ কয়েক বছর ধরেই ওঁর পিছনে লেগে ছিলাম , বিষয়টি এমন ,  বিয়ে করতে হবে আমরা দাওয়াত খাবো । বন্ধুবর অনেক ভেবে আমাদেরকে বলেছিল , দুই হাজার ঊনিশের শেষের দিকে বিবাহ করবো  । সেই অনুযায়ি আমরাও মানসিকভাবে তৈরি হচ্ছিলাম , বন্ধু বিয়ে করবে আমরা পেট ভরে খাবো । কিছুদিন পূর্বে সেই বন্ধুটিকে ধরেছি , বললাম কিরে , কবে খাবো পেটপুরে ? বন্ধুবর পুরোপুরি নিশ্চুপ , এমন ভাব যেন একটু আগে জলঙ্গীর জলে ওর ঘরবাড়ি সব ভেসে গেছে । বললাম , কী রে , কিছু বল ? ও যা বললো , সেটি শুনে আমাদের চোখ ছানাবানা হওয়ার অবস্থা । বেচারাই বলবো , বলে কী ভাই পিঁয়াজের যে দাম , সংসার চালাবো কিভাবে ? উপার্জন তো করি ওই কয়টা ট...

স্থায়ী চাকরি নেই , বেসরকারি ক্ষেত্রে লাঞ্ছিত হচ্ছেন শিক্ষিত যুবক যুবতীগণ । এ বিষয়ে কলম ধরেছেন আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

ছবি
সরকারি চাকরির হাঁড়িতে মা ভবানী বাস করতে শুরু করেছে বেশ কিছু বছর  । চাকরি নেই , কালেভাদ্রে দু চারটে পরীক্ষা হলেও নিয়োগ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটে না । ফলত , জীবনের জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সহ অন্যত্র মাথা গুঁজছেন  শিক্ষিত যুবক যুবতীগণ । লাঞ্ছনা , অপমান ও অনিয়মিত বেতন কাঠামোর আবর্তে অনেকেরই জীবন বাঁধা পড়ছে । বিষয়টি দৃষ্টান্তযোগে বললে পাঠক বুঝবেন ।  একটা কলেজের পাশাপাশি এক মিশন স্কুলেও পড়িয়েছি বেশ কিছু সময় । এ গল্প সেই সময়কার । গল্প বলতে সাধারণভাবে যেমন বোধ হয় আমাদের , তার থেকে এ গল্প কিছুটা স্বতন্ত্র । গল্পটি এক ঝাঁক তরুণ এবং তরুণীর ।একটা কথা প্রচলিত আছে , বেসরকারি প্রতিষ্টানে কাজ করতে গেলে চামড়াটা নাকি একটু পুরু হতে হয় । কর্তাব্যক্তিদের মেজাজ বুঝে চলতে হয় । তাঁরা শুধু বলে যাবেন , আপনি কিছু বলতে পারবেন না । ঠিকঠাক মাইনে দিতে চাইত না উক্ত প্রতিষ্টানটি  । এটা নাকি মিশন স্কুলের ঐতিহ্য , যদিও ব্যতিক্রম নিঃসন্দেহ আছে । তবে , আমাদের এই স্কুলটা শিক্ষিত যুবকদের খুব একটা কদর করতো বলে মনে হতো না । দেখতাম , পিছনে সকল শিক্ষক কানাঘুষি করতো , কলুর বলদের মত খাট...

অর্থ না বুঝেই আরবী নাম রাখেন অধিকাংশই বাঙালি মুসলমান । এ বিষয়ে লিখেছেন আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

ছবি
নাম দিয়ে মানুষ চেনা না গেলেও , নাম দিয়ে ধর্ম চেনা যায় । অর্থাৎ নাম মানুষটি কোন ধর্মের , সেটা সহজেই অনুমেয় হয় । নেপথ্যের কারণ হল , পৃথিবীর প্রায় সকল ধর্মের মানুষদের নামকরণের ক্ষেত্রে এক সরলরৈখিক একমুখী ধারার উপস্থিতি রয়েছে । উদাহরণ যোগে বিষয়টি ব্যাখ্যাযোগ্য করা দরকার , ধরুন হিন্দুধর্মের গণমানুষদের যেসব নাম সমূহ আমাদের চক্ষুগোচর হয় , সেই সকল নামের পূর্বে '  শ্রী ' ও ' শ্রীমতি ' শব্দদ্বয়ের উপস্থিতি লক্ষ্য করার মত । এছাড়াও হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষজনের নাম অনেকক্ষেত্রেই দেবদেবীগণের নাম সদৃশ ও সংস্কৃতজাত  হয়ে থাকে , যেমন মহাদেব , গণেশ , বিষ্ণু , কৃষ্ণ , লক্ষী , পার্বতী ইত্যাদি । আবার খৃষ্টান ধর্মাবলম্বী গণমানুষদের নাম সাধারণত মাইকেল , স্টিফেন , হকিংয় , স্টিভ প্রভৃতি ইংরেজিজাত ও বাইবেল সম্পৃক্ত হয় । অনুরুপভাবে ইসলামনুসারি মুসলিমদের নাম পুরো বিশ্বময় আরবীজাত । বিশ্বময় মুসলিমদের নামকরণের প্রবণতা মূলত একমুখী । মুসলিম জনসমাজ নামকরণের ক্ষেত্রে কেন আরবি  ভাষ্যমতে নামকরণ করেন ? এর নেপথ্যের কারণটি মূলত মনস্তাত্বিক । মুসলিম উম্মাহ বিশ্বাস করে , পৃথিবীর পবিত্র ভাষা হল...

পৃথিবী পুরুষ বৃদ্ধ হচ্ছে , এগিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুর দিকে । লিখেছেন আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

ছবি
১ . মানুষের কান্না এখন  পৃথিবীর জাতীয়  সঙ্গীত :  যে সূর্য রোজ পৃথিবী পুরুষের বুক চিরে সগৌরবে ওঠে , তা জীবন্ত সূর্য নয় , গ্রহণলাগা সূর্য । একটা বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবী পুরুষের পুরো শরীরময় । মানুষের সাধের এ ভূমি সুস্থ নয় । ক্যান্সারের মত এক মহাক্ষয় রোগ তাঁর হৃদপিন্ডকে নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে ধ্বংশের মহাদ্বারপ্রান্তে ।একটা উন্মাদ ধ্বংশ নৃত্যে মুখরিত হচ্ছে জীবনের গল্পগুলো । ' সাধের মানব জনম ঘেঁটে ঘ ' আকার ধারণ করেছে । মানবিক বিশ্ব কিম্বা মানবিক মুখ সমূহ লুকিয়ে পড়েছে কুয়াশার আড়ালে । ভালো মানুষ কমে আসছে এমনটি কিন্তু নয় । ভালো মানুষ আছেন ।  যথেষ্ট পরিমাণই আছেন , তবে ক্ষীণতর স্বর নিয়ে । ফলে অত্যচারির খড়্গহস্ত শক্তপাথরের মত হয়ে ভালোমানুষের টুঁটি চেপে ধরলেও অন্য ভালোমানুষ সকল স্বকাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন জীবনের গাড়িকে সচল রাখতে । অর্থাৎ বিপদ যতসময় না শরীর ঘেঁষে এসে দাঁড়াচ্ছে কিম্বা দেওয়ালে ঠেকছে পিঠ , তার প্রাকমুহূর্ত পর্যন্ত গণভালো মানুষগণ টু শব্দটি করছেন না । প্রসঙ্গক্রমে না বললে অন্যায় হবে , সব্বাই যে এই একই দলভুক্ত এমন আপ্তবাক্য উপস্থাপন করবার দুঃসাহস...

শিক্ষাঙ্গনে অবক্ষয় রুখতে চাই গুরু শিষ্যের সক্রিয় পারস্পরিক সহযোগিতা ।লিখেছেন আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

ছবি
সার্বিক অর্থে পৃথিবী পুরুষের চলার পথে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে , বিষয়টি অস্বীকার করবার উপায় নেই । মানব জীবনের প্রায় প্রতিটি পর্বই বর্তমান কাল প্রবাহে এসে ' ঘেঁটে ঘ ' সদৃশ আকার নিয়েছে । সত্য কথা শক্তভাবে বললে লিখতে হবে , একটা মানবিক অবক্ষয়ের মধ্য দিয়ে মুখরিত হয় এখনকার জীবনের গল্পগুলো । ফলে প্রতিটা সম্পর্কও দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ইগো , হিংসা প্রতিহিংসার গোত্রে । সন্তান বাবা মাকে শীতের সন্ধ্যায় একাকী নির্জন রেল স্টেশনে যেমন ফেলে যাচ্ছে , তেমনি অকৃতজ্ঞ বাবা মাও সদ্যোজাত বাচ্চাকে আঁস্তাকুড়ে ফেলতেও কম্পিত হচ্ছেন না । এসবই হয়তো কালের কারসাজি । আমরা অভিযোজিত হচ্ছি মাত্র , যুগের ঘূর্ণি ঘুরিয়ে অমানবিক সভ্যতার প্রতিভূ করে তুলছে আমাদের । মূলত শিক্ষকতার পেশার যুক্ত আছি । সেই অভিজ্ঞান থেকেই গুরু শিষ্যের সম্পর্কের সেকাল একালগত পরিআবহিক পরিমণ্ডলের মানদন্ডের ওঠা নামা নিয়ে একটু আলোচনা রাখছি । পাঠক আপনারা  নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন , আর পাঁচটি সম্পর্কের মতই গুরু শিষ্যের সম্পর্কের আনুপাতিক ভাগহার কিছুটা হলেও নিন্মমুখী হচ্ছে । আমাদের বিদ্যালয় সময়কার শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদে...

মজিদ কাকুকে আজও মনে পড়ে - আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

ছবি
আমি কেন স্বমেধা ব্যয় করে পুস্তক সমালোচনা করি , এমন প্রশ্ন অনেক প্রিয় গুণমুগ্ধ বন্ধু করেছেন । তাঁরা আমার অকৃত্তিম হিতকরী বান্ধব । কেননা , ওই সময়টিতে একটি মৌলিক লেখা , লেখা যায় । আসলে , আমি তাঁদের বইগুলোই সমালোচনা করি যাঁরা আমাকে সমৃদ্ধ করে , যাঁদেরকে দেখলে ভয়ঙ্কর রকম আপন মনে হয় , এমন ব্যক্তিত্বরাই আমাকে লিখিয়ে নেন । উপরের  বইটি মজিদ সাহেবের । আমার মজিদ কাকুর । অভিজাত সম্ভ্রান্ত মানুষ । প্রাসাদোপম বাড়িতে বসবাস করতেন । আর .জি .কর হাসপাতালের উচ্চপদস্থ কর্মচারি ছিলেন । আমার গুরু প্রখ্যাত কবি সাংবাদিক উপস্থাপক নীলাদ্রী ভৌমিক দা'র সূত্রে তাঁর সঙ্গে আলাপ । জানি না কেন , খুব তাড়াতাড়িই সকলের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব ঘনিষ্ঠ পর্যায়ে পৌঁছে যায় । তাঁর সঙ্গে আমার যখন আলাপ তখন তাঁর বয়স একাত্তর বছর । এক্কেবারেই তরুণ , ফিটফাট এবং হ্যান্ডসাম । ছোটগল্প , উপন্যাস মিলিয়ে ততদিনে ১৪টি বই বেরিয়ে গেছে । সুভাষ স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন , ত্রিপুরা সরকার তাঁকে সংবর্ধিত করেছেন । আমার একটি বদ অভ্যাস আছে , আমার প্রিয়জনদের সঙ্গে সম্পর্ক গাম্ভীর্যপূর্ণ হলে ব্যতিব্যস্ত হয় । একটা গুণই বলবো , তিনি যত গম্ভীর এবং অভি...