পোস্টগুলি

একটা সুইসাইডিয়াল ডায়ারি । অনিরুদ্ধ আলি আকতার

ছবি
বিন্দু বিন্দু নোনা জল আর গন্ধক মাখানো জমাট বাঁধা ধোঁয়ায় নেমকহারামের দেউড়িটা যখন বেশ চেনা লাগ তখনই বুঝি শরীরটা কঙ্কালের সাথে সহবাসের ইচ্ছে প্রকাশ করছে। মাথার পিচগলা রাস্তায় কারফিউ জারি করে স্বপ্নরা যখন  পতাকা তোলো,তখনই বুঝি নীলাভ বিছানায় তোমার সাথে চিল্কা ভ্রমণে যেতে আমার আপত্তি নেই। যে আমি একহাট লোকের মাঝে মনজুয়েলার্সের গহনা খুলে নগ্ন হয়েছিলাম, দু'কলি দেশের গান গেয়ে বলেছিলাম--প্রত্যেক  দেশদ্রোহীর বুকে পাথর  চাপানো উচিৎ এখনই।  সেই আমি তরতাজা চোখে আর প্রজাপতি দেখি না। দেখি--কবরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ঝড়ে ভাঙা গাছ। দেখি--পোকাধরা নিমপাতাকে শুয়ে থাকতে রাস্তার ধারে। তবুও যখন চোখে পড়ে দুলন্ত মাধবিলতার ঝাক বা ভেসে থাকা সবুজ শ‍্যাওলা  তখন মনে হয়, পটাশিয়াম নয় প‍্যারাসিটামলই দরকার আমার।

জীবন জেগে আর্তনাদ করে যে স্টেশনে , আমি তার নাম দিয়েছি পৃথিবী । আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

ছবি
এমনটি ছিল না পৃথিবী ।  পিতামহ মাতামহদের কাছে শোনা পৃথিবী যেন অন্যকোন পৃথিবী । মমত্ববোধ , মানবিকতার এক অনন্য ফাল্গুধারায় সিক্ত ছিল সত্তর আশি নব্বইয়ের দশকগুলো । বাবাদের কাটানো শৈশব যৌবনের দিনগুলোও তেমন মন্দ ছিল না । শোনামতে এত্তব্যাপক নোংরা রাজনীতিক পরিআবহ থেকে বেশ কিছুটা মুক্ত ছিল সেই সব দিনগুলো । রাজনীতিক কদর্যতা যে ছিল না , সেটা বললে কিছুটা ভুল বলা হবে বইকি ! তবে কিছু পঙ্কিলতা থাকলেও জনজীবন এত্তটা কলুষিত ছিল না । আমাদের শৈশবের দিনগুলোতেও মানুষের  এতটা কদর্য নগ্নরুপ দেখেনি । গণমানুষের প্রতি ভালোবাসা , মমতা তখনও কিছুটা অক্ষুন্ন ছিল । হঠাৎ করেই , অন্ততঃ গত সাত আট বছরে মানবিকতার দৃষ্টিকোন থেকে পৃথিবীতে এক ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্যগোচর হতে দেখছি । বেশ কয়েকটা সম্প্রদায়গত গণহত্যা এই কয় বছরের ভিতর আমরা সংঘটিত হতে দেখলাম । হিটলারের ইহুদি নিধনের পর সবচেয়ে বড়ো সম্প্রদায়গত গণহত্যা রোহিঙ্গা জনগোষ্টির উপর নির্যাতন , এই বিষয়টি কেউই অস্বীকার করতে পারবেন না । একেবারেই নির্বিঘ্নে কোন প্রতিরোধ ছাড়াই  শান্তিতে নোবেল পাওয়া সুচির সরকার এই হিংস্র কর্মকান্ডকে রুপ দিতে পারল । চীন...

প্রেম ও প্রত্যাখ্যান - মধুবনি

ছবি
শর্মিলা বিকাল থেকে বিছানায় পড়ে আছে,এখন রাত ৯টা, না এখন আর সহ্য করা যাচ্ছে না এই অসহ্য যন্ত্রনা;ঘন অন্ধকার রাত, আলো জ্বালানো যাবে না, আলোতে আরো অসহ্য হয়ে ওঠে যন্ত্রণা,এই ব্যথা আর পিছন ছাড়লো না শর্মিলার। জানালাটা খুলে দিলো, একটু বাতাস আসুক, জল কি খাবে একটু,জল খেয়েই ছুটে পালালো কলতলায়, সব বমি হয়ে গেল, শরীর ঝিমিয়ে পড়েছে,আর শক্তি নেই কল পাম্প করার, বিছানায় এসে শুয়ে পড়লো, ঠান্ডা হওয়া আসছে জানালা থেকে। শর্মিলা ভাবছে কি করে এরকম একা হয়ে গেল, একদম একা, অন্ধকার ঘরে থেকেও জীবন অন্ধকারময়।ব্যথা আর ঘুমে আচ্ছন্ন অবস্থায় চিন্তা পাক খেতে থাকে- পিনাক- তুই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যা, যা বলছি। শর্মিলা- কেন করছিস এরম বল। পিনাক-বুঝিসনি বল, এইযে সকাল থেকে বোঝাচ্ছি আর এখন বলছিস কেন এরকম করছি। শর্মিলা-দেখ, শান্ত হ, এরকম করিসনা। পিনাক-থাম মাগি, নাটক করিস? শর্মিলা- প্লিজ তুই থাম, জানিস আমি কাঁদলে খুব মাথা আর চোখ যন্ত্রনা করে… না আবার কেন, এসব কথা ভাবছি আমি, "ওহ, ভগবান কেন আমাকে এসব মনে করাও বার বার, আমার স্মৃতি শক্তি নিয়ে নাও তুমি, আমি ভাবতে চাই না।" দীর্ঘশ্বাস ফেললো শর্মিলা। "কাল স্কুল যাওয়...

কোভিড ১৯ এবং কিছু কথা । আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

ছবি
' কোভিড , ১৯ ' , করোনা ভাইরাসের মরণ থাবা পুরো পৃথিবীকেই দাঁড় করিয়ে দিয়েছে অস্তিত্ব সংকটের ভয়ঙ্কর চৌকাঠের সমীপে । বিশ্বময় গণ মানবের জীবনের গল্প সমূহ হঠাৎ করেই ' ঘেঁটে ঘ ' সদৃশ আকার নিয়েছে । মৃত্যুমুখী একটা মিছিল চীন - ইউরোপ হয়ে আমাদের শরীর ঘেঁষে এসে দাঁড়িয়েছে । রাক্ষুসী করোনা যমদূতকে সাথে নিয়েই ঘুরছে অলিগলি রাজপথ । এই মুহূর্ত ভয়ঙ্কর সতর্ক থাকবার সময় । সমান্যতম অসতর্কতা আমাদেরকেও করে  তুলতে পারে মৃত্যুমিছিলের গণ অংশ । নিঃসন্দেহ ভাবে , এ এক মহা বিপদঘন্টা , তবুও নিবিড়ভাবে ভাবলে , অর্থাৎ একটু অন্যভাবে যদি ভাবা যায় , তাহলে লক্ষ্যগোচর হবে কয়েকটি বিষয় । প্রথমত , গণমানবের মধ্যকার যে পশুত্ব , অর্থাৎ বিদ্বেষ , একটি ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি অমানুষিক আক্রোশ , ধর্মীয় স্লোগান সহযোগে গণহত্যা , এন .আর .সি , এন .পি .আর আতঙ্ক , ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর হুঙ্কারের গতিময়তাকে জোর ধাক্কা দিতে পেরেছে করোনার ভয় , আতঙ্ক । মন্দির মসজিদ রাজনীতি এই কয়টা দিন মুখ থুবড়ে পড়েছে ডাস্টবিনে । করোনা আতঙ্ক ' কোভিড ১৯ ' গণ মানবের লুপ্তপ্রায় মানবিক অনুভূতিগুলো কিছুটা হলেও ফিরি...

আজাদ অ্যাকাডেমির পক্ষে মিনাখাঁ ব্লকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ।

ছবি
করোনার ভয়াবহতা রুখতে লকডাউনে মানব জীবন যখন একেবারেই রুদ্ধ নিষ্প্রাণ , ঠিক সেই অপমুহূর্ত সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে ধেয়ে এল মারণ ঝড় আমফুন । একদিকে করোনা , তারও আগে এন .আর .সি' র রক্তচক্ষুতে এমনিতেই জনজীবন বাধা পাচ্ছিল জীবন ধরণের পদে , সেই মুহূর্তই ভয়াবহ আমফুন ছাড়িয়ে গেল সব মাত্রা । লকডাউনে কাজ হারানো মানুষগুলো এবার হারালেন মাথার ছাদ , ক্ষেতের ফসল আর আম জাম কাঁঠালের বাগান । রাজ্যের প্রায় ১০টি জেলার ক্ষতি পরিমাণ ভয়াবহ আকার নিলেও সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা ।  এই এলাকা গণমানব এমনিতেই দুস্থ সম্প্রদায়ের , ফলে এই প্রকৃতিক প্রাদুর্ভাব তাঁদেরকে আরও জীবন মৃত্যুর টানাটানিতে বেঁধে দিল । এমন পরিস্থতিতে দরকার মানবিক সাহায্য । আজাদ আকাডেমির কর্ণধার শিক্ষক সমাজসেবি শাহাবুদ্দিন ফারুকএবং তাঁর বন্ধুরা এই সমস্ত দুস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে নজির স্থাপন করলেন । কয়েকশত মানুষকে তাঁরা তুলে দিলেন চাল ডাল সাবান সয়াবিন মুড়ি সহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য । আমাদের প্রতিনিধি ফারুক সাহেবের কাছে সেখানকার পরিস্থতি সম্পর্কে জানতে চাইলে , দির্ঘশ্বাস ফেলে ফারুক সাহেব বললেন , আল্লাহ অশেষ কুদরতে আমরা ভালো আছ...

সংসারের চাবি কার হাতে ? এই নিয়েই শাশুড়ি বৌমার লড়াই বাঙালির ঘরে ঘরে ।

ছবি
আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।  সমাজ বহিরঙ্গে পুরুষতান্ত্রিক , তবে অন্তঃপুরে পুরুষের শাসন থাকে না বললেই চলে । সাংসারিক রোজনামাচার প্রায় সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন নারীগণ । এককথায় বললে , বহির্জাগতিক বিষয়ে পুরুষগণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেও , সংসারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নারীগণের সিদ্ধান্তই মুখ্য হিসাবে পরিগণিত হয় । পুরুষের জীবনে মূলত নারীগণ চার রকম সম্পর্কে আবির্ভূত হন । মা - স্ত্রী -কন্যা ও বোন নারীর মূলত এই চারটি রুপ হলেও , সংসার পরিচালনার ক্ষেত্রটি মূলত থাকে মা ও স্ত্রীর হাতে । জাগতিক নিয়মেই যেখানে কতৃত্ব , সেখানেই সংগোপনে লুকিয়ে থাকে দ্বন্দ । এটাও এক ধরনের ক্ষমতার লড়াই , যা ক্ষতবিক্ষত করে সংসার নামক সম্রাজ্যকে । শাশুড়ি বৌমার এই যে দ্বন্দগত পরম্পরা হঠাৎ করেই এক সংকটময় পরিআবহের সৃষ্টি করেছে , এমনটি ভাবলে ভুল হবে । দ্বন্দগত এই পরম্পরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম বাঙালি মহিলা মহল বহন করছেন , এটি একপ্রকার ঐতিহ্য বটে ।  শাশুড়ি বৌমার এই দ্বন্দময় পরিবেশন তৈরি মূল কারণটি অবশ্যই মনস্তাত্বিক । এক অহেতুক আশঙ্কা এবং ঈর্ষা রয়েছে এর মূলকথনে । সংসারের চাবি থাকবে কার আঁচলে ? এই দ্বন্দের মূল প্রশ...

' বিদ্রোহী ' প্রকাশের পর নিন্দুকদের প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়েন কাজী নজরুল ইসলাম। আরিফুল ইসলাম সাহাজি ।

ছবি
কাজী নজরুল ইসলামের  অমর কালজয়ী কবিতা '  বিদ্রোহী ' ।   ১৯২১ - এর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে কলকাতার তালতলা লেনের বাসাবাড়িতে একদিন একটি নিঃশব্দ বিস্ফোরণ ঘটল । কবি লিখলেন ,  ' বল বীর  বল উন্নত মামা শির !  শির নেহারি আমার নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির ' ।  কলকাতার তালতলা লেনের ৩ /৪ সি বাড়িটি বিদ্রোহী কবিতার জন্মস্থল । দ্বিতল বাড়িটির নীচতলার দক্ষিণ পূর্ব ঘরটিতে ভাড়ায় থাকতেন কবি নজরুল ইসলাম এবং কবিবন্ধু বিশিষ্ট সমাজকর্মী কমরেড মুজাফ্ফর আহমেদ ।  ' বিদ্রোহী ' কবিতার  প্রথম শ্রোতা ছিলেন কমরেড মুজাফ্ফর আহমদ ।' বিদ্রোহী ' কবিতা সম্পর্কে আলাপচারিতাই মুজাফ্ফর আহমেদ লিখেছেন , ' কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর বিদ্রোহী কবিতাটি লিখেছিল রাত্রীতে । রাত্রীর কোন সময়ে তা আমি জানি না । রাত ১০ টার পরে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম । সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে আমি বসেছি এমন সময় নজরুল বলল , সে একটি কবিতা লিখেছে । পুরো কবিতাটি সে তখন পড়ে শোনাল । ' বিদ্রোহী ' কবিতার আমিই প্রথম শ্রোতা । ' কবিতাটি কখন লেখা হয়েছিল , সে প্রসঙ্গে মুজাফ্ফর আহমেদ লিখেছেন , ' আমার ম...