পোস্টগুলি

প্রথম পর্ব : বর্ণ বিষয়ক আলোচনা

ছবি
 বর্ণ বিভিন্ন ধ্বনিকে লেখার সময় বা নির্দেশ করার সময় আমরা যে চিহ্নসমূহ ব্যবহার করা থাকি , তাকে বর্ণ বলে। বর্ণকে আমরা দুভাবে ভাগ করতে পারি - স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ। ১. স্বরধ্বনি  চেনার  জন্য ব্যবহৃত বর্ণকে স্বরবর্ণ বলে। ২. ব্যঞ্জনধ্বনি   চেনার জন্য ব্যবহৃত বর্ণকে ব্যঞ্জনবর্ণ বলে। হসন্ত বা হলন্ত ধ্বনি : আমরা যখন ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণ করি, তখন তার শেষে একটি স্বরধ্বনি ‘অ’-ও উচ্চারণ করি। যেমন, ‘খ উ চ্চরণ করি (খ + অ =) খ ’। উচ্চারণের সুবিধার জন্য আমরা এই কাজ করি। কিন্তু স্বরধ্বনি ছাড়া ‘খ উচ্চারণ করলে সেটা প্রকাশ করার জন্য ‘খ -এর নিচে যে চিহ্ন (& )দেয়া হয়, তাকে বলে হস্ / হল চিহ্ন। আর যে ধ্বনির পরে এই চিহ্ন থাকে, তাকে বলে হসন্ত বা হলন্ত ধ্বনি বলে আমরা অভিহিত করতে পারি । কোন বর্ণের নিচে এই চিহ্ন দেয়া হলে তাকে বলে হসন্ত বা হলন্ত বর্ণ।  বাংলা জানি , বর্ণমালা বাংলা বর্ণমালায় বর্ণ আছে মোট ৫০টি। নিচে বর্ণমালা অন্যান্য তথ্য সহকারে দেয়া হলো-  স্বরবর্ণ অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ ঐ* ও ঔ* ৬ ১ ৪ ব্যঞ্জনবর্ণ ক খ গ ঘ ঙ ২ ২ ১ চ ছ জ ঝ ঞ ৪ - ১ ট ঠ ড ঢ ণ ৪ ১ - ত থ দ ধ ন ৩ ২ - ...

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর ছোটগল্প - শুভ দৃষ্টি

ছবি
শুভদৃষ্টি কান্তিচন্দ্রের বয়স অল্প, তথাপি স্ত্রীবিয়োগের পর দ্বিতীয় স্ত্রীর অনুসন্ধানে ক্ষান্ত থাকিয়া পশুপক্ষী-শিকারেই মনোনিবেশ করিয়াছেন। দীর্ঘ কৃশ কঠিন লঘু শরীর, তীক্ষ্ম দৃষ্টি, অব্যর্থ লক্ষ্য, সাজসজ্জায় পশ্চিমদেশীর মতো; সঙ্গে সঙ্গে কুস্তিগির হীরা সিং, ছক্কনলাল, এবং গাইয়ে বাজিয়ে খাঁসাহেব, মিঞাসাহেব অনেক ফিরিয়া থাকে; অকর্মণ্য অনুচর-পরিচরেরও অভাব নাই। দুই-চারিজন শিকারী বন্ধুবান্ধব লইয়া অঘ্রানের মাঝামাঝি কান্তিচন্দ্র নৈদিঘির বিলের ধারে শিকার করিতে গিয়াছেন। নদীতে দুইটি বড়ো বোটে তাঁহাদের বাস, আরো গোটা-তিনচার নৌকায় চাকরবাকরের দল গ্রামের ঘাট ঘিরিয়া বসিয়া আছে। গ্রামবধূদের জল তোলা, স্নান করা প্রায় বন্ধ। সমস্ত দিন বন্দুকের আওয়াজে জলস্থল কম্পমান, সন্ধ্যাবেলায় ওস্তাদি গলায় তানকর্তবে পল্লীর নিদ্রাতন্দ্রা তিরোহিত। একদিন সকালে কান্তিচন্দ্র বোটে বসিয়া বন্দুকের চোঙ সযত্নে স্বহস্তে পরিষ্কার করিতেছেন, এমন সময় অনতিদূরে হাঁসের ডাক শুনিয়া চাহিয়া দেখিলেন, একটি বালিকা দুই হাতে দুইটি তরুণ হাঁস বক্ষে চাপিয়া ধরিয়া ঘাটে আনিয়াছে। নদীটি ছোটো, প্রায় স্রোতহীন, নানাজাতীয় শৈবালে ভরা। বালিকা হাঁস দুইটিকে...

চিত্তরঞ্জন দাসের কবিতা

ছবি
তরঙ্গে তরঙ্গে আজ যেই গীত বাজে, সোনার স্বপন ভরা প্রভাতের মাঝে; সেই গীতে ভরি গেছে হৃদয় আমার, গগনে পবনে বহে সেই গীত ধার! কি মোরে করেছ আজ! মনখানি মম, শত শত তন্ত্রীভরা গীতযন্ত্র সম,- পরশি তোমার করে কাঁপিয়া কাঁপিয়া, গরবে গৌরবে আজ উঠিছে বাজিয়া।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি অমর ছোট গল্প - ডিটেক্টিভ

ছবি
ডিটেকটিভ আমি পুলিসের ডিটেকটিভ কর্মচারী । আমার জীবনের দুটিমাত্র লক্ষ্য ছিল — আমার স্ত্রী এবং আমার ব্যবসায় । পূর্বে একান্নবর্তী পরিবারের মধ্যে ছিলাম , সেখানে আমার স্ত্রীর প্রতি সমাদরের অভাব হওয়াতেই আমি দাদার সঙ্গে ঝগড়া করিয়া বাহির হইয়া আসি । দাদাই উপার্জন করিয়া আমাকে পালন করিতেছিলেন , অতএব সহসা সস্ত্রীক তাঁহার আশ্রয় ত্যাগ করিয়া আসা আমার পক্ষে দুঃসাহসের কাজ হইয়াছিল । কিন্তু কখনো নিজের উপরে আমার বিশ্বাসের ত্রুটি ছিল না । আমি নিশ্চয় জানিতাম , সুন্দরী স্ত্রীকে যেমন বশ করিয়াছি বিমুখ অদৃষ্টলক্ষ্মীকেও তেমনি বশ করিতে পারিব । মহিমচন্দ্র এ সংসারে পশ্চাতে পড়িয়া থাকিবে না । পুলিসবিভাগে সামান্যভাবে প্রবেশ করিলাম , অবশেষে ডিটেক্‌‌টিভ-পদে উত্তীর্ণ হইতে অধিক বিলম্ব হইল না । উজ্জ্বল শিখা হইতেও যেমন কজ্জলপাত হয় তেমনি আমার স্ত্রীর প্রেম হইতেও ঈর্ষা এবং সন্দেহের কালিমা বাহির হইত । সেটাতে আমার কিছু কাজের ব্যাঘাত করিত; কারণ পুলিসের কর্মে স্থানাস্থান কালাকাল বিচার করিলে চলে না , বরঞ্চ স্থানের অপেক্ষা অস্থান এবং কালের অপেক্ষা অকালটারই চর্চা অধিক করিয়া করিতে হয় — তাহাতে করিয়া আমার স্ত্রীর স্...

আরিফুল ইসলাম সাহাজির ছোট গল্প

ছবি
প্রণাম নেবেন স্যার (অনুগল্প ) প্রায় এক দশক আপনার সঙ্গে দেখা হয়নি ।কর্ম ব্যস্ততা একটা ছল ।স্বার্থপর হয়ে গেছি ।কলকাতার  চাকচিক্যে অন্ধ হয়ে ছিলাম একযুগ ।গতকাল রাতে ,আপনাকে দেখলাম ।স্বপ্নে ।আপনি পড়াচ্ছেন, দোতলার কোনার ঘরটায় ।আমি ,ফিরোজ ,আলামিন আর সঞ্জীব এক বেঞ্চ বসে আছি ।আমাদের বয়স অনেকটা কমে গেছে ।মন্ত্রমুগ্ধর মত শুনছি ।কখনও শক্তি ,কখনও সুভাষ ,নজরুল থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছেন আপনি ।প্রিয় শিক্ষক হারুন আলম স্যার । অদিতির ডাকে ঘুম ভাঙলো।অদিতি আমার স্ত্রী।বন্ধুদের মধ্যে একমাত্র ফিরোজের সঙ্গে যোগাযোগ আছে ।ফিরোজ আমার পাড়ায় থাকে ।একটা সরকারি কলেজে বাংলা পড়ায় ।লেখালিখিও করছে আজকাল ।একটু নামও করেছে ।গত রবিবার ,হঠাৎ করেই আমার বাড়িতে এসেছিল ফিরোজ ।সাধারণত ,রবিবার কোন কাজ  রাখি না ।দিনটা আমার অদিতির আর আমাদের ছেলে অভিকের ।একটু দেরি হলে ,হয়ত বেরিয়ে পড়তাম ।অদিতিই দরজা খুলল । - কেমন আছেন দাদা ।ভিতরে আসুন ।   অভিক ,বাবাকে বল - ফিজ কাকু এসেছেন । অদিতি দারিদ্রতা দেখেনি ।বিয়ের পর ডা: শান্তনু মিত্রকে দেখেছে ।আপনার শানুকে কোনদিন দেখেনি ।আলামিনকে মনে আছে আপনার ? প্রতি ক্লাসে প্রথম হতো ।ও আম...

আরিফুল ইসলাম সাহাজির কবিতা হেলে গেছে

ছবি
হেলে গেছে বিবেক ।সমাজ ।পৃথিবী ।               আমার বাড়ির পেয়ারা        গাছটার মত ,         মূল শিকড় কেটে গেছে         বাঁশ দিয়ে ঢেকো দিয়েছি হেলে গেছে বিবেক।সমাজ ।পৃথিবী ।           আমার বইরাখা টেবিলের মত            দুটো পায়ায় ঘুন ধরেছে            একটা ভাল আছে কোনরকম             পাশ দিয়ে ইঁটের ধরাট দিয়েছি হেলে গেছে বিবেক ।সমাজ।পৃথিবী ।            আমার সোয়েটারের মত             একটা হাতা              ছোট হয়ে গেছে              টেনে টেনে বড় করি সময় এসেছে । একটা পেয়ারা গাছ ।একটা টেবিল । একটা সোয়েটার । আর একটা নতুন পৃথিবী দরকার ॥

সব পাল্টে যাচ্ছে ...

সব পাল্টে যাচ্ছে পাল্টে যাচ্ছে আমার সকাল বিকেল ,পাল্টে যাচ্ছে সন্ধ্যা রাত্রি পাল্টে যাচ্ছে বইয়ের পাতা পাল্টে যাচ্ছে ঝিলের জল ,বিলের শামুক উঠছে ক্ষেতে পাল্টে যাচ্ছি নিজে নিজেই পাল্টে যাচ্ছে বনকুসুমের গন্ধ ,বনবিছুটি লতা উঠছে না জানলা বেয়ে পাল্টাচ্ছে সব ,ডুমুর গাছের রাতজাগা পাখির ডাক ।ইছামতির উপরে কাশফুলের দুলুনি ।শিয়ালের ডাক । সব পাল্টে যাচ্ছে ।আমার দেশ ।আমার পড়া ইতিহাস ॥